কলকাতা হাই কোর্ট। — ফাইল চিত্র।
নারায়ণগড় বিডিওর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসককে ৮ সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। সোমবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে৷ মামলাকারীর উপস্থিতিতেই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে জেলাশাসককে। এবং সংশ্লিষ্ট বিডিও সব রিপোর্ট ও তথ্য নিয়ে জেলাশাসকের দফতরে উপস্থিত থাকবেন।
এ দিন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। অভিযোগ শুনে প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন 'এটি খুব ব্যাতিক্রমী ঘটনা।' আদালত সব নথি দেখে বিবেচনা করে জানায়, "সাধারণত পঞ্চায়েত সমিতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা হিংসার অভিযোগ থাকে। কিন্তু এক্ষেত্রে এটি বিরল ঘটনা যে পঞ্চায়েতের সদস্য বিডিও-র বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন।"
গত ২০ জুলাই কলকাতা হাই কোর্টে নারায়ণগড়ের বিডিও কৃশানু রায়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি, সহ-সভাপতি, কর্মাধ্যক্ষ-সহ ব্লকের কয়েকজন বিদায়ী পঞ্চায়েত প্রধান। মোট ১১জন জনপ্রতিনিধি ওই রিট পিটিশন করেছিলেন। মিড ডে মিলের অর্থ তছরুপ, পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে আলোচনা না করে একক সিদ্ধান্তে কাজ করা, ভুয়ো বিল বানিয়ে সরকারি টাকা আত্মসাৎ, পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে কাজে অসহযোগিতা করা, সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার-সহ নানা অভিযোগ আনা হয়েছে ওই বিডিও-র বিরুদ্ধে। মূল অভিযোগকারী পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ অনাদি বারিক। এ দিন হাই কোর্টে তিনি উপস্থিত ছিলেন। অনাদির দাবি, বিডিও সরকারি তহবিলের অপব্যবহার করছেন। বিডিও যে জনগণের স্বার্থে টাকা খরচ করছেন, এই ব্যাপারে তাঁরা আরটিআই করে কিছু রিপোর্ট দেখতে চাইলেও তিনি দেখাতে পারেন না। মামলাকারীর দাবি, প্রথমে জেলাশাসককে বিষয়টি জানালেও কিছু সুরাহা হয়নি। মামলাকারীর আইনজীবী সৌমেন দত্ত ও সব্যসাচী ভট্টাচার্য এ দিন বিডিও যে টাকা তছরুপ করেছেন, তার যাবতীয় প্রমাণ জমা করেন আদালতে। তাঁদের আর্জি, বিডিও র বিরুদ্ধে তদন্ত করা হোক। বিডিও-র আইনজীবী সম্রাট সেন ও বিশ্বব্রত বসু মল্লিক মামলাটিকে চ্যালেঞ্জ করেন। কিন্তু আদালত তাতে গুরুত্ব দেয়নি। উল্টে তাঁদের মৃদু ভর্ৎসনা করেছে।
হাই কোর্টের নির্দেশ প্রসঙ্গে জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরী বলেন, "এখনও মহামান্য আদালতের কোনও নির্দেশ পাইনি। নির্দেশ পেলে যা করণীয় তাই করা হবে।"