খড়্গপুরের মহকুমা হাসপাতালে ডেঙ্গি মোকাবিলার প্রস্তুতি নিজস্ব চিত্র
এলাকায় বাড়ছে মশার দাপট। ছড়াচ্ছে ডেঙ্গি ভয়।
এত দিন ডেঙ্গির রক্ত পরীক্ষা করতে খড়্গপুর থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে আসতে হত অথবা যেতে হত বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। অবশেষে সেই ম্যাক এলাইজা পরীক্ষা শুরু হচ্ছে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে।
আজ, মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে ডেঙ্গির রক্ত পরীক্ষা চালু হবে। তবে গত দু’সপ্তাহ ধরে পরীক্ষামূলকভাবে এই রক্ত পরীক্ষা হয়েছে। তাতে নির্ভুল রিপোর্ট এসেছে বলেই দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। এ বার থেকে প্রতি সপ্তাহে মঙ্গলবার ও শুক্রবার ডেঙ্গির ম্যাক এলাইজা পরীক্ষা হবে এখানে। শুধু খড়্গপুর শহর নয়, মহকুমার বিভিন্ন গ্রামীণ ও ব্লক হাসপাতাল থেকে আসা রক্তের নমুনাও এখানে পরীক্ষা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যে রেলশহরের দু’জনের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে ওই পরীক্ষায়।
মহকুমা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “এতে দ্রুত রিপোর্ট যেমন পাওয়া যাবে তেমনই আরও উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা আমরা দিতে পারব।” তবে এখনও হাসপাতালে প্লেটলেট তৈরির যন্ত্র নেই। সে জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যালের উপরই নির্ভর করতে হয়।
ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে কেউ ভর্তি হলে পাঁচদিন পরে রক্তের নমুনা মেদিনীপুর মেডিক্যালে পাঠানোই ছিল এত দিনের দস্তুর। গোটা জেলার চাপ মেডিক্যালে থাকায় রিপোর্ট পেতে প্রায় ১০ দিন লেগে যেতে। তার মধ্যেই অনেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতেন, অনেকের অবস্থার অবনতি হওয়ায় অন্যত্র ‘রেফার’ হতে হত। গত বছর স্বাস্থ্য দফতরের মাধ্যমে খড়্গপুর পুরসভা ম্যাক এলাইজা পরীক্ষার একটি যন্ত্র পেয়েছিল। সেটি মহকুমা হাসপাতালকে হস্তান্তর করেছিল পুরসভা। তবে যন্ত্রটি এতদিন চালু করা যায়নি। কারণ ওতে রক্ত পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় কিট ও ওয়াশার যন্ত্র হাসপাতালে ছিল না।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “এ বার স্বাস্থ্যভবন থেকে আমাদের একটি ওয়াশার দেওয়ায় ওই যন্ত্র সম্পূর্ণ চালু করা সম্ভব হয়েছে। রক্ত পরীক্ষার জন্য পর্যাপ্ত কিটও খড়্গপুরে দেওয়া হয়েছে। এতে রোগীরা উপকৃত হবেন।” ডেঙ্গির চিকিৎসায় প্যাক সেল ভলিউম পরীক্ষার জন্য সেল কাউন্টার যন্ত্রও পেয়েছে মহকুমা হাসপাতাল।
শহরে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে সোমবারই বৈঠকে বসেছিল খড়্গপুরে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে গঠিত টাস্ক ফোর্স। ২০১৭ সালে ডেঙ্গি ভয়াবহ আকার নিয়েছিল এই শহরে। মৃত্যু হয়েছিল দু’জনের। তারপরেই রেল, পুরসভা, জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরকে নিয়ে এই টাস্ক ফোর্স গঠিত হয়। গত কয়েকমাস বন্ধ ছিল টাস্ক ফোর্সের বৈঠক। এ দিন ফের বৈঠক করে শহরে মশা মারার স্প্রে নিয়মিত দেওয়ার সিদ্ধান্ত
নেওয়া হয়।