Hospital

হাসপাতালেই দৃষ্টিহীন তরুণীর ‘শ্লীলতাহানি’, গ্রেফতার নিরাপত্তাকর্মী

বুধবার সকালে ভগবানপুর থানার লালপুর এলাকার বাসিন্দা বছর পঁচিশের দৃষ্টিহীন ওই তরুণী এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চোখের ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

এগরা শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৫৫
Share:

ফাইল চিত্র

দৃষ্টিহীন এক তরুণীকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার সময় হাসপাতালেই তাঁর শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠল এক নিরাপত্তা কর্মীর বিরুদ্ধে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত নিরাপত্তাকর্মী। বুধবার সকালে এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ঘটনা। অভিযুক্ত নিরাপত্তাকর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাঁর বাড়ি এগরা-১ ব্লকের এরন্দা গ্রামে।

Advertisement

বুধবার সকালে ভগবানপুর থানার লালপুর এলাকার বাসিন্দা বছর পঁচিশের দৃষ্টিহীন ওই তরুণী এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চোখের ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন। টিকিট কাটার পরে হাসপাতালে কর্তব্যরত নিরাপত্তাকর্মীদের কাছে তিনি চোখের ডাক্তার কোথায় বসে জানতে চান। সেই সময় চঞ্চল মান্না নামে ওই নিরাপত্তাকর্মী তাঁকে লিফটে করে হাসপাতালের দোতলায় চোখের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসককে দেখানোর পর ওই নিরাপত্তা কর্মীর সহায়তায় দৃষ্টিহীন তরুণীটি হাসপাতালের সাততলায় সহকারী সুপারের চেম্বারে তাঁকে চোখের চিকিৎসার জন্য সরকারি সুযোগ-সুবিধার বন্দোবস্ত করে দিতে বলেন। কিন্তু হাসপাতালে এই ধরনের কোনও সরকারি আর্থিক সুবিধা পাওয়া যায় না বলে তাঁকে জানানো হয় এবং এই বিষয়ে নির্দিষ্ট দফতরে আবেদন করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

পুলিশ সূত্রের খবর, ওই তরুণী এর পর সাততলা থেকে নেমে ফের ওই নিরাপত্তাকর্মীর কাছে আসেন এবং তাঁর সহায়তায় টোটো ধরে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। কিন্তু বাড়ি না গিয়ে ওই তরুণী সরাসরি এগরা থানায় চলে যান। সেখানে এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ওই নিরাপত্তা কর্মী চঞ্চল মান্না হাসপাতালের মধ্যে তাঁর শ্লীলতাহানি করেছেন বলে অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নেমে এগরা থানার পুলিশ ওই নিরাপত্তাকর্মীকে বুধবার রাতে গ্রেফতার করে। হাসপাতালেরই নিরাপত্তা কর্মীর হাতে এক রোগীর শ্লীলতাহানির অভিযোগকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়েছে। এই অবস্থায় হাসপাতালে আসা রোগীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্র‌শশ্ন তুলেছেন অনেকে।

Advertisement

প্রসঙ্গত, স্বাস্থ্য দফতরের নিয়ম মেনে এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করে কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নামের তালিকার সুপারিশ ক্রমে সংস্থা তাঁদের নিয়োগ করে। তবে হাসপাতালে কাজের ক্ষেত্রে নিরাপত্তাকর্মীদের সেই অর্থে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ। পাশাপাশি হাসপাতালে প্রতিবন্ধী রোগীদের সহায়তায় বিশেষ কোনও ব্যবস্থা থাকে না বলে অভিযোগ। সে ক্ষেত্রে মানবিক দিক থেকেই নিরাপত্তা কর্মীরা তাঁদের সহযোগিতা করেন। তাঁর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে ওই নিরাপত্তাকর্মী বলেন, ‘‘প্রতিবন্ধী ওই তরুণী আমার কাছে চিকিৎসকের কাছে যাবেন বলে সহযোগিতা চেয়েছিলেন। মানবিক কারণেই সহযোগিতা করেছি। আমার বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।’’

হাসপাতালের সুপার রঞ্জন রায় বলেন, ‘‘আমরা অভিযোগের বিষয়টি শুনেছি। ঠিক কী ঘটনা ঘটেছে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ এগরা থানার পুলিশ জানিয়েছে, তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে ঘটনা তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement