মংলামোড় বাজারে বিক্রি হচ্ছে বাজি। নিজস্ব চিত্র।
পাঁচ কিলোমিটার রাস্তার দু’পাশে বানানো হয় শতাধিক কালীপুজোর মণ্ডপ। তা দেখতে উপচে পড়ে ভিড়। করোনা আবহে সে সব কিছুতে পড়েছে প্রভাব। কিন্তু প্রভাব পড়েনি এগরার বাজির বিক্রিতে। অভিযোগ, আদালতের নির্দেশ অমান্য করেই প্রকাশ্যে দেদার বিক্রি হচ্ছে বাজি। মাস্ক ছাড়া খালি মুখেই সেই বাজি কিনতে ভিড় করছেন জনতা।
করোনা রোগী এবং করোনা জয়ীদের কথা ভেবে এবার দীপাবলিতে বাজি ফাটানো সম্পূর্ণ নিষেধ করেছে হাইকোর্ট। নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বাজি বিক্রিতেও। এ নিয়ে এগরায় আগে মাইকে করে প্রচার চালিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু শুক্রবারে বাজারগুলিতে যে ছবি দেখা গিয়েছে, তা আদালতের নির্দেশকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়েছে।
এ দিন এগরার আলংগিরি বাজারে বাজি বিক্রি হতে দেখা গিয়্ছে। নিষিদ্ধ শব্দ বাজি দোদোমা, কালিপটকা, তারা বাতি, তুবড়ি, হাওয়াই, কী নেই সেই পসরায়। খুচরো ও পাইকারি— দুইই কেনাবেচা চলছে নির্দ্বিধায়। মংলামাড়ো বাজির পাইকারি বাজার থেকে এলাকায় বাজি সরবরাহ হয়। তাই শেষ বেলার বাজি বাজারে ভিড় উপচে পড়েছে। সামনে তারা বাতি, রংবাতি, হাওয়াই থাকলেও গোপনে বিক্রি করা হচ্ছে শব্দ বাজি। স্থানীয় সূত্রের খবর, পটাশপুর ও ভগবানপুর থেকে বেআইনি বাজি ব্যবসায়ীরা এখানে এসে বাজি বিক্রি করেন। একদিনে এক একজন ব্যবসায়ীর প্রায় ৫০ হাজার টাকার পাইকারি বিক্রি হয়। এক বাজি ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘লকডাউনে ব্যবসা একেবারে বন্ধ থাকায় বেকার হয়ে গিয়েছিলাম। দীপাবলির মরসুমে বাজি বিক্রি করে সারা বছরের উপার্জন হয়। আদালতের নিষেধ থাকলেও পেটের দায়ে বাজি বিক্রি করছি।’’
অবশ্য বাজি বিক্রির অভিযোগ এ দিন পানিপারুল বাজারে সুশোভন জানা নামে এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বেআইনি ভাবে বাজি বিক্রি প্রসঙ্গে এগরার এসডিপিও মহম্মদ বৈদুজামান বলেন, ‘‘খোলা বাজারে বাজি বিক্রির বিষয়টি আমাদের নজরে নেই। পদক্ষেপ করা হবে।’’
অন্য দিকে, পটাশপুরের অমর্ষি থেকে পালপাড়া পর্যন্ত এগরা-ভগবানপুর রাস্তার ধারের জনপ্রিয় কালীপুজোগুলি এবার জৌলুসহীন। অন্য বছর চলে থিমের লড়াই। এবার সেই সবে ভাটা পড়েছে। পুজো ঘিরে এবারে বসবে না কোনও মেলা। হবে না আতসবাজি প্রদর্শনী। পালপাড়া জোড়া কালীমন্দিরেও দর্শনার্থীদের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা হবে। মন্দিরের গর্ভগৃহে ভক্তদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষেধ থাকছে। এগরার বালিঘাইয়ের পাতাল ভৈরবী পুজো দেখতে ভিন্ রাজ্য থেকে প্রচুর মানুষ ভিড় করেন। এবারে করোনা পরিস্থিতিতে সেই ভিড় নিয়ন্ত্রণ করার পরিকল্পনা নিয়েছে পুজো কমিটিগুলি।