চা-চক্রে দিলীপ, কুনার, সুখময়।
চা-চক্রে হাজির বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। প্রশাসনিক নির্দেশ উড়িয়ে তাই সাতসকালে চা দোকান খোলানোর অভিযোগ উঠল।
শনিবার ঝাড়গ্রাম শহরে এই কর্মসূচি ছিল দিলীপের। শহরের একাধিক ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হওয়ায় ঝাড়গ্রামে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যে ৭ টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা থাকবে বলে শুক্রবার জেলা প্রশাসন নয়া নির্দেশিকা দিয়েছে। কিন্তু নির্ঘণ্টের নিয়ম ভেঙেই এ দিন সকাল সাড়ে ৬টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত দিলীপের কর্মসূচির জন্য পাঁচ মাথা মোড়ের কাছে একটি চা দোকান খোলানো হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী বিরবাহা সরেন বলেন, ‘‘দিলীপবাবুর চা-চক্রের জন্য প্রশাসনের নির্দেশ লঙ্ঘন করে নির্ধারিত সময়ের চার ঘন্টা আগে চায়ের দোকান খোলানো হয়েছে। প্রশাসনকে বিষয়টি জানাব।’’
সকাল পৌনে ছ’টায় দলীয় কার্যালয় থেকে জেলা বিজেপি সভাপতি সুখময় শতপথী, ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রম, পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো-সহ জেলা ও শহরের কয়েকজন নেতা-কর্মীকে নিয়ে প্রাতর্ভ্রমণে বেরোন দিলীপ। শহরের বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে সাড়ে ছ’টায় পাঁচ মাথা মোড়ের কাছে দলীয় এক কর্মীর বাড়ির সামনে রাস্তার ধারে চেয়ার পেতে বসেন দিলীপ। পাশে চা দোকান থেকে গ্লাসে চা আসে। চা-বিস্কুট খাওয়ার ফাঁকে দু’-এক জন এসে শহরের নিকাশি ও রাস্তার সমস্যা জানান। পরে দিলীপ বলেন, ‘‘২০২১-এ আমাদের ক্ষমতায় আসতে দিন। এই সমস্যা আর থাকবে না।’’ পথচলতি অনেকেই দিলীপকে দেখে দাঁড়ান। কেউ কেউ দিলীপের সঙ্গে নিজস্বী তোলেন। দিলীপ নমস্কার করেন সবাইকে। সকাল সাতটা নাগাদ হেঁটে দলীয় কার্যালয়ে ফিরে যান তিনি।
এ দিনই দুপুরে রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের সন্ত্রাসের প্রতিবাদে জেলাশাসকের দফতরে বিজেপি-র ডেপুটেশন ও অবস্থান বিক্ষোভ ছিল। ঝাড়গ্রামে কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। তবে পাঁচ মাথার মোড়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী ব্যারিকেড করে বিজেপি-র মিছিল আটকে দেয়। রাস্তার মাঝে সায়ন্তন টুলে চেপে বক্তৃতা করেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের পুলিশ-প্রশাসন মাওবাদীদের সঙ্গে মিলে জঙ্গলমহলে বিজেপি কর্মীদের খুনের পরিকল্পনা করছে।’’ পুলিশ ব্যারিকেড করায় পথচলতি লোকজন ও গাড়িকে ঘুরপথে যেতে হয়। বিরবাহার কটাক্ষ, ‘‘করোনা আবহে ঝাড়গ্রাম এখনও অনেক সুরক্ষিত। সেটা দিলীপবাবুদের ভাল লাগছে না। তাই তাঁরা নিয়ম ভাঙছেন।’’ দিলীপের অবশ্য দাবি, ‘‘আমরা মানুষকে সচেতন করার কাজ করছি। রাজ্য সরকারই করোনার তথ্য গোপন করে মানুষকে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।’’ জেলা বিজেপি-র সভাপতি সুখময় শতপথীর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল ও তাদের প্রশাসন নিজেরাই কোনও নিয়ম মানে না।’’