মেদিনীপুরে অরবিন্দ মেনন। নিজস্ব চিত্র
লোকসভায় বিপর্যয়ের পর ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের হাত ধরেছে তৃণমূল। সোমবার দলের সদস্য সংগ্রহ অভিযানে এসে সেই প্রশান্তকেই বিঁধলেন এ রাজ্যে বিজেপির সহ- পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন।
মেদিনীপুরে দলীয় কর্মসূচির ফাঁকে অরবিন্দ বলেন, ‘‘প্রশান্ত কিশোর বড় ভোট কুশলী হতে পারেন। কিন্তু যে জিনিস পচে গিয়েছে, যে জিনিস নষ্ট হয়ে গিয়েছে, তার ব্র্যান্ডিং করে কি কিছু হয়?’’ তাঁর দাবি, ‘‘প্রশান্ত কিশোর কুছ নেহি কর পায়েগা।’’ মেননের কটাক্ষ, ‘‘ভাল ভাল মানুষেরা তৃণমূল ছাড়ছেন। শুধু পিসি- ভাইপো থেকে যাবেন!’’
এ দিন প্রথমে মেদিনীপুরে সদস্য সংগ্রহ অভিযানে যোগ দেন অরবিন্দ। সেখান থেকে যান খড়্গপুর। বিজেপির দাবি, অরবিন্দ যে দিন এলেন ঘটনাচক্রে সেদিনই জেলায় বিজেপির সদস্য তিন লক্ষ ছাড়িয়েছে। স্বভাববতই খুশি বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশ। তাঁর ঘোষণা, ‘‘পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সকল কার্যকর্তাকে ধন্যবাদ। জেলা তিন লক্ষ সদস্য অতিক্রম করেছে।’’
জেলা সদর শহরে দলের একাধিক কর্মসূচিতে যোগ দেন অরবিন্দ। দলের নেতাদের নিয়ে মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর হলে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে দলের জেলা পদাধিকারী, দলের সমস্ত শাখা সংগঠনের পদাধিকারী, দলের মণ্ডল পর্যবেক্ষক প্রমুখ ছিলেন। বৈঠকে জনসংযোগ আরও বাড়ানোর উপর জোর দেন অরবিন্দ। এ বার লোকসভা ভোটে মূলত উত্তরবঙ্গের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তাঁর হাত ধরে দল সাফল্যও পেয়েছে। দলের এক সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, টানা দশ বছর মধ্যপ্রদেশে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন বিজেপির এই নেতা। মধ্যপ্রদেশে বিজেপির ‘শক্তিশালী’ সংগঠনের পিছনে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। লোকসভায় বাংলার ভোট সামলানোর ওই বিশেষ দায়িত্ব তাঁকে দিয়েছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহই।
মেদিনীপুরে এসে তৃণমূলকে বিঁধেছেন অরবিন্দ। তাঁর দাবি, রাজ্যের ক্ষমতা থেকে তৃণমূলের যাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। এ নিয়ে দেওয়াল লিখন হয়ে গিয়েছে বলেও শাসক দলকে কটাক্ষ করেছেন তিনি। অরবিন্দের কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের মানুষ তৃণমূলের সরকার থেকে মুক্তি চাইছেন। আজ নির্বাচন হলে আজই মানুষ তাঁর রায় দেওয়ার জন্য তৈরি। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ১৮টি আসন পেয়েছে। এখানে দেওয়াল লিখন হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল যাচ্ছে, বিজেপি আসছে।’’
রেলশহরের তালবাগিচা, আয়মা ও নিমপুরায় সদস্য সংগ্রহ অভিযান উপলক্ষে পথসভার আয়োজন হয়েছিল। পরে মালঞ্চর চণ্ডীপুরের ভীমচকে একটি যোগদান কর্মসূচির আয়োজন করেছিল বিজেপি। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দেন অরবিন্দ। সেখানেই তৃণমূলের কর্মী শক্তি সাহু, গৌতম দাস, ময়না চালকের হাতে দলের পতাকা তুলে দেন। ওই তিনজনের নেতৃত্বে এ দিন ১৫০ জন বিজেপিতে যোগ দেন। অরবিন্দকে বলতে শোনা যায়, ‘‘এই রাজ্য থেকে এভাবেই কয়েকদিনের মধ্যে তৃণমূল হারিয়ে যাবে। কারণ, আগে যাঁরা ছিল টিএমসি। এখন তাঁদের দেখে লোক বলছে টিএম-ছিঃ।’’