দেওয়াল লিখছেন সৌমেন্দু অধিকারী। নিজস্ব চিত্র।
চলতি বছরে রয়েছে লোকসভা ভোট। সেই নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনও ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন। তবে আগে ভাগেই শুভেন্দুর নিজের এলাকা কাঁথিতে দেওয়াল লিখন শুরু করল গেরুয়া শিবির।
মঙ্গলবার দুপুরে কাঁথি পুরসভা এলাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে দেওয়ার লিখনের কাজ শুরু করেন জেলা (কাঁথি) বিজেপি নেতৃত্ব। সেই কাজের সূচনা করেন বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সৌমেন্দু অধিকারী। এদিন শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ৮৪ নম্বর বুথে নিজের হাতে পদ্ম প্রতীক আঁকেন সৌমেন্দু। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ছাড়া তাঁদের বাড়ি ‘শান্তি কুঞ্জে’র বাকি সকলে সংশ্লিষ্ট বুথের ভোটার। শুভেন্দু নন্দীগ্রামের নন্দনায়েক বুথের ভোটার।
২০২২ সালে পুরভোটে কাঁথির ৮৪ নম্বর বুথে পরাজিত হয় বিজেপি। সেবার গোটা কাঁথি শহরে ব্যাপক ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ এনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হন শুভেন্দু-সহ বিজেপি নেতারা। এবার সেই বুথ থেকেই বিজেপির লোকসভা ভোটের দেওয়ার লিখনের কাজের সূচনা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। শহরের পাশাপাশি গোটা লোকসভায় এলাকার প্রতিটি বিধানসভায় দেওয়াল লিখন শুরু হয়ে গিয়েছে বলেজেলা বিজেপি সূত্রের খবর। যদিও দলের প্রার্থী কে হবেন তা আপাতত ফাঁকাই রাখা হচ্ছে।
লোকসভা ভোটের এত আগে কেন দেওয়ার লিখন?
এ প্রসঙ্গে বিজেপির কাঁথি সংগঠনিক জেলার সভাপতি ও বিধায়ক অরূপ দাস বলছেন, ‘‘দলের কেন্দ্রীয় কমিটি এবং রাজ্য কমিটির নির্দেশ মেনে মঙ্গলবার থেকে দেওয়াল লিখনের কাজ শুরু করা হয়েছে।’’ পিছিয়ে নেই তৃণমূলও। কিছুদিন আগেই পটাশপুর- ২ ব্লকে একাধিক জায়গায় তৃণমূলের দেওয়াল লিখন শুরু হয়েছে।
এবার লোকসভা ভোটে রাজ্যের ৪২ টি আসনের নিরিখে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি এবং তমলুক আসন। কাঁথিতে শিশির অধিকারী আর তমলুকের সাংসদ রয়েছেন দিব্যেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর বাবা এবং ভাইয়ের লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল আর বিজেপির প্রার্থী কে হবেন, তা নিয়ে চর্চা তো রয়েছেই। শুভেন্দু জানিয়ে দিয়েছেন তমলুক এবং কাঁথি দুটি লোকসভা আসন প্রধানমন্ত্রীকে উপহার হিসেবে তুলে দেবেন। তারপর জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে বিজেপির দেওয়াল লিখন শুরু হওয়ায় লোকসভা ভোটের ঢাকে কাঠি পড়ল বলে মনে করেন রাজনৈতিক কারবারীরা।
এ নিয়ে তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পীযূষকান্তি পন্ডা বলছেন, ‘‘গণতন্ত্র আছে বলেই কাঁথিতে বিজেপির লোকেরা দেওয়াল লিখন করতে পারছে। মানুষ আমাদের সঙ্গেই রয়েছেন।’’ তৃণমূলকে পাল্টা কটাক্ষ করছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রশেখর মণ্ডল বলছেন, ‘‘গণতন্ত্র যে বিঘ্নিত হয়েছে, তা কাঁথি পুরসভা এলাকার মানুষ চাক্ষুষ করেছেন। পঞ্চায়েত ভোটেও গতবছর জেলার মানুষ তৃণমূলের সন্ত্রাস দেখেছেন।’’