প্রতীকী ছবি।
জঙ্গলমহলের জেলা ঝাড়গ্রামে প্রশাসনের বিরুদ্ধে করোনা-তথ্য চাপার অভিযোগে বারবার সরব হয়েছে বিরোধীরা। এ বার সেখানে করোনা ও অন্য সংবাদের ক্ষেত্রেও সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধের চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলল বিজেপি।
সোমবার জেলা বিজেপির কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিলেন দলের জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী। সেখানে দলীয় সাংসদ কুনার হেমব্রম, জেলা পর্যবেক্ষক সুজিত অগস্তির উপস্থিতিতে সুখময় দাবি করেন, কয়েকদিন আগে করোনার সৎকার সংক্রান্ত একটি খবর সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন এক সাংবাদিক। পুলিশ থেকে তাঁকে ফোন করে একটি ছবি মোছানো হয়েছে। আর এক সাংবাদিক সমাজমাধ্যমে বনভূমিতে বসবাসকারী এক শবরের বাড়ি ভেঙে দেওয়ার ভিডিয়ো প্রতিবেদন পোস্ট করেছিলেন। সেক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বাড়িতে গিয়ে সেই ভিডিয়ো পোস্ট মুছতে বাধ্য করেছে পুলিশ। বিজেপির জেলা সভাপতির অভিযোগ, ‘‘সমাজের চতুর্থস্তম্ভের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করার চেষ্টা হচ্ছে।’’
বিজেপির দাবি, করোনা নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক না ডেকে প্রশাসন ইচ্ছেমতো কাজ করছে। জনবহুল এলাকার মধ্যে করোনা হাসপাতাল বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। করোনা আক্রান্তের মৃতদেহ সৎকার করার নির্দিষ্ট জায়গা করা হয়নি। শহরে আচমকা কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করে এলাকা ঘিরে দেওয়া হচ্ছে। অথচ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের জিনিসপত্র সরানোর সময়ও দেওয়া হচ্ছে না। সেই প্রসঙ্গ তুলে সুখময় এ দিন বলেন, ‘‘সাংসদ বার বার যোগাযোগ করে করোনার তথ্য জানতে চেয়েছেন। কিন্তু তাঁকে কোনও তথ্য জানানো হচ্ছে না। কেউ করোনা আক্রান্ত হলে তাঁকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সেটা পরিজনরা জানতে পারছেন না। পুলিশ দিয়ে গায়ের জোরে যে ভাবে এই জেলায় করোনা নিয়ন্ত্রণের কাজ হচ্ছে, এভাবে সামলানো সম্ভব নয়।’’ করোনা নিয়ে সঠিক তথ্য দিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার দাবি জানিয়েছেন তিনি। রোজ কত টেস্ট হচ্ছে, টেস্টের প্রকৃত রিপোর্ট আনার দাবি করে জেলা প্রশাসনের উদ্দেশ্যে ওই বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘সবাইকে সঙ্গে নিয়ে যৌথ আলোচনার ভিত্তিতে প্রকৃত চিত্রটা জানান। প্রশাসনের কীসের ভয় সেটা বুঝতে পারছি না।’’
পুলিশ অবশ্য সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধের অভিযোগ মানেনি। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘করোনা মোকাবিলায় জনস্বার্থে প্রয়োজনীয় সব রকম পদক্ষেপ করা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমের অধিকারে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ সঠিক নয়।’’ জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র সুব্রত সাহার দাবি, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে ঘোলাজলে মাছ ধরতে চাইছে বিজেপি। প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর যথাযথ পদক্ষেপ করছে। বিজেপি মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করছে।’’