নন্দীগ্রামে বিজেপির মিছিলে নেতৃত্বে শুভেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহে নন্দীগ্রামে প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। টিকিট না পাওয়া তৃণমূলের ‘বিক্ষুব্ধ’ অংশ নির্দল হিসেবে মনোনয়ন জমা করছে। বস্তুত, নন্দীগ্রামের দুটি ব্লকের ১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতেই নির্দলে প্রার্থী দিচ্ছে তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী। একে সুযোগ হিসাবে দেখছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়কের দাবি, ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েতেই জয়ী হবেন তাঁরা।
মঙ্গলবার নন্দীগ্রাম-২ ব্লকে মনোনয়ন জমা করতে যাওয়া বিজেপি প্রার্থীদের মিছিলে পা মেলান শুভেন্দু। তাঁর হাতে ছিল বিজেপির প্রতীক পদ্মের কাটআউট। মিছিল থেকে শুভেন্দুর দাবি, “নন্দীগ্রামের ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েতই বিজেপির দখলে যাবে। বাকি ৫টি পঞ্চায়েতে বিরোধীরা এগিয়ে থাকলেও তার মধ্যে ২টি পঞ্চায়েতে ত্রিশঙ্কু ফল হবে। সেখানেও পরে বিজেপিই ক্ষমতায় আসবে।” তিনি আরও বলেন, “এই রাজ্যের যেখানেই ভোট হবে সেখানেই তৃণমূল হারবে।” ‘নো ভোট টু মমতা’ স্লোগান তোলেন তিনি।
এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোনও ভাবেই লড়াইয়ের ময়দানে তৃণমূলকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিততে দিতে রাজি নয় বিজেপি। ভোট ঘোষণার পর দিন থেকেই নন্দীগ্রামের পাশাপাশি গোটা পূর্ব মেদিনীপুরে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা করছে গেরুয়া শিবির। ইতিমধ্যে নন্দীগ্রামের ২টি ব্লকের প্রায় সমস্ত পঞ্চায়েতেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। সেদিক থেকে কিছুটা পিছিয়ে রাজ্যের শাসকদল। তৃণমূল সূত্রে খবর, বুধবার শেষলগ্নেই তৃণমূলের সমস্ত প্রার্থী মনোনয়ন জমা করবেন। অন্য দিকে, বামেরাও সমস্ত আসনে মনোনয়ন দিচ্ছে। ফলত, বিরোধী ভোট এক সারিতে আসার কোনও সম্ভাবনাই আর থাকছে না।
নন্দীগ্রামের পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুরে এ বার নির্দল প্রার্থীর আধিক্য লক্ষ্যণীয়। এ নিয়ে বিজেপি এবং তৃণমূল, দুই শিবিরেই তরজা শুরু হয়েছে। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “এই নির্দল প্রার্থীর মনোনয়ন পেশ আসলে তৃণমূলেরই গোষ্ঠীকোন্দলের বহিঃপ্রকাশ।” কিন্তু তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি ভিন্ন। নন্দীগ্রামের তৃণমূলের ব্লক সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গের কথায়, “গণতান্ত্রিক নির্বাচনে যে কেউ মনোনয়ন দেবে। তবে বিজেপির বিক্ষুব্ধরাই বেশি পরিমাণে নির্দলে প্রার্থী দিচ্ছেন।”