ভুয়ো নথিতে ব্যাঙ্কে চাকরির নালিশ
Suvendu Adhikar

Tamluk: শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতার স্ত্রী ‘পলাতক’

পুলিশ সূত্রে খবর, এদিন মহুয়ার খোঁজে পুলিশ প্রথমে নন্দীগ্রামের হরিপুর গ্রামে মেঘনাদ পালের বাড়িতে যায়। কিন্তু সেখানে মহুয়াকে পাওয়া যায়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২২ ০৮:২৩
Share:

ফাইল চিত্র।

তমলুক কো-অপারেটিভ এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কে কর্মরত ছিলেন।, কিন্তু চাকরি পেতে ভুয়ো নথিপত্র দিয়েছিলেন তিনি। এমনই অভিযোগ উঠেছে নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতা মেঘনাদ পালের স্ত্রীর বিরুদ্ধে। ব্যাঙ্কের নন্দীগ্রাম শাখার ম্যানেজার পদে রয়েছেন অভিযুক্ত মহুয়া পাল। ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান সত্যরঞ্জন সাহু গত বুধবার তমলুক থানায় অভিযোগ দায়ের করে জানান, মহুয়া ভুয়ো নথিপত্র দিয়ে ব্যাঙ্কের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যানের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মহুয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, তমলুকের এসডিপিও এবং তমলুক থানার আইসি সহ পুলিশ বাহিনী মহুয়াকে গ্রেফতার করতে রবিবার নন্দীগ্রামে যায়। যদিও তাঁকে পাওয়া যায়নি। সমবায় ব্যাঙ্ক ও স্থানীয় সূত্রে খবর, শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত মেঘনাদ আগে নন্দীগ্রাম-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি পদে ছিলেন। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে শুভেন্দুর সাথেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। মেঘনাদ তমলুক কো-অপারেটিভ এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদেও ছিলেন। তাঁর স্ত্রী মহুয়া ২০০২ সালে ওই ব্যাঙ্কের গ্রেড-৪ কর্মী হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। মাধ্যমিক পাশ যোগ্যতায় ওই চাকরি পাওয়ার পর ২০০৪ সালে পদোন্নতির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে গ্রেড-৩ কর্মী হন। তারপর মহুয়া স্নাতক যোগ্যতার সার্টিফিকেট জমা দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। যদিও ওই সার্টিফিকেট ভুয়ো বলে অভিযোগ উঠেছে। গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হয়েছেন বলে মহুয়াদেবী যে সার্টিফিকেট জমা দিয়েছিলেন তার সত্যতা যাচাই করতে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। ব্যাঙ্ক কতৃপক্ষের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মহুয়াদেবীর রেজাল্ট শিট বৈধ নয় বলে জানিয়েছে। এরপর মহুয়াকে শো-কজ করা হয়েছিল। তিনি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে জবাবও দিয়েছিলেন।

ব্যাঙ্ক সূত্রে খবর, মহুয়া জানিয়েছিলেন যে তিনি চণ্ডীপুরে একটি স্টাডি সেন্টারে ভর্তি হয়ে ওই সার্টিফিকেট পেয়েছিলেন। সম্প্রতি ব্যাঙ্কের বোর্ড অফ ডিরেক্টেরের সভায় মহুয়ার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। গত বুধবার ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান সত্যরঞ্জন সাহু মহুয়ার বিরুদ্ধে তমলুক থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করে পুলিশ। মহুয়াকে গ্রেফতার করতে রবিবার তমলুকের এসডিপিও এবং তমলুক থানার আইসি সহ পুলিশ বাহিনী নন্দীগ্রামে যান। পুলিশের ওই অভিযানের সময় নন্দীগ্রাম বাজারে শুভেন্দু অধিকারীর বিধায়ক কার্যালয়ে পুলিশের তল্লাশি ঘিরে বিতর্ক তৈরি শুরু হয়েছে।

Advertisement

এ বিষয়ে মেঘনাদ ও মহুয়াকে বার বার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁদের পাওয়া যায়নি।

পুলিশ সূত্রে খবর, এদিন মহুয়ার খোঁজে পুলিশ প্রথমে নন্দীগ্রামের হরিপুর গ্রামে মেঘনাদ পালের বাড়িতে যায়। কিন্তু সেখানে মহুয়াকে পাওয়া যায়নি। এরপর পুলিশ নন্দীগ্রাম বাজারে শুভেন্দুর বিধায়ক কার্যালয়ে তল্লাশি চালাতে যায় মহুয়ার খোঁজে। পুলিশের তল্লাশির সময় বিধায়ক কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু। অভিযোগ উড়িয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে বলেন, ‘‘মহুয়ার সন্ধানে প্রথমে তাঁর বাড়িতে পুলিশ যায়। কিন্তু সেখানে তাঁর আত্মীয়রা তল্লাশিতে বাধা দেয়। পরে আমাদের কাছে খবর আসে মহুয়া বিধায়ক কার্যালয়ে রয়েছেন। এবিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ সেখানে তল্লাশি চালাতে গেলে লোকজন বাধা দিয়েছিল। পরে ওই কার্যালয়ের দু’তিনটি ঘরে তল্লাশি চালাতে দেওয়া হলেও অন্যান্য ঘরে তল্লাশি চালাতে বাধা দেওয়া হয়েছে। কার্যালয়ে তল্লাশির ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে। বিধায়ক কার্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’

বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে বা দোষী হলে পুলিশ তাঁর খোঁজে তাঁর বাড়িতে যেতে পারেন। কিন্তু পুলিশ যে ভাবে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নন্দীগ্রামের অফিসে গিয়ে কর্মীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছে ও তাঁদের উপর চাপ সৃষ্টি করেছে তা সম্পূর্ণ আইন বিরুদ্ধ। বিধায়ককে না জানিয়ে যে ভাবে পুলিশ ওই অফিসে জোর করে ঢুকেছে তাতে পুলিশ যে শাসকদলের অঙ্গুলি হেলনে দলদাসের মতো কাজ করছে তা আজকের ঘটনায় প্রমাণিত। আমরা এই ঘটনার নিন্দা করছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement