বাইক মিছিল আটকানো নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তর্ক। পটাশপুরে। —নিজস্ব চিত্র।
লোকসভার আগে সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শনে ধাক্কা খেল বিজেপি। পূর্ব ঘোষণামতো রবিবার সকালে হলদিয়া, তমলুক, কাঁথি, এগরা মহকুমা সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় বাইক মিছিল করতে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হল বিজেপির নেতা কর্মীদের।
বিজেপির তরফে এর পিছনে শাসক দলের অঙ্গুলি হেলনের অভিযোগ তোলা হয়েছে। তবে জেলা পুলিশের দাবি, অনুমতি না থাকায় এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলার কারণে বিজেপির বাইক মিছিল আটকানো হয়েছে।
জেলার পুলিশ সুপার ভি সলোমন নেশাকুমার জানিয়েছেন রবিবার বাইক মিছিলের জন্য আগাম কোনও অনুমতি নেয়নি। তা ছাড়া উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকায় বাইক মিছিল আটকে দেওয়া হয়।
যদিও পুলিশের দাবি মানতে নারাজ বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। দলের জেলা যুব মোর্চার সভাপতি দেবজিৎ সরকার জানান, বাইক মিছিলের জন্য প্রশাসনকে আগাম লিখিত জানানো হয়েছে। কেবল মাত্র রাজনৈতিক চাপে পুলিশ তাঁদের কর্মসূচীতে বাধা দিল। মিছিল বন্ধ করার পুলিশ কোনও লিখিত নির্দেশও দেখাতে পারেনি। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রসঙ্গে জেলা বিজেপি নেতৃত্বের প্রশ্ন, পরীক্ষার কারণে বাইক মিছিল বন্ধ করা হলে এ দিনই পাঁশকুড়ায় মাইক বাজিয়ে তৃণমূলের কর্মিসভার অনুমোদন পুলিশ দিল কী করে? এটা শাসক দলের পক্ষাপাতের নিদর্শন ছাড়া কী!
এ দিন সকালে সঙ্কল্প মিছিলে কয়েকশো বিজেপি কর্মী-সমর্থক বাইক নিয়ে হাজির হয় পটাশপুর মতিরামপুরে মোড়ে। পুলিশ সূত্রে খবর, এর জন্য প্রশাসনের অনুমতি নেয়নি বিজেপি। ফলে বেআইনি বাইক মিছিল আটকাতে এসডিপিওর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকা ঘিরে ফেলে। কোনও ভাবেই বাইক মিছিল করা যাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়। ভগবানপুর এবং এগরাতেও একই ভাবে মিছিল আটকে দেয় পুলিশ।
বিজেপির বাইক মিছিল নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায় দিঘা-সহ কাঁথি মহকুমার বিভিন্ন এলাকায়। পুলিশ এই ঘটনায় রবিবার বিকেল পর্যন্ত ৬ জন বিজেপি কর্মীকে আটক করেছে। দশটি বাইকও আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, নন্দীগ্রামের টেঙ্গুয়া, ডগলাস মাঠের কাছে তাদের দলীয় কার্যালয়গুলি সকাল থেকেই পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়াররা ঘিরে রেখেছিল। তাই তারা এদিন বাইক মিছিল করতে পারেনি।
গোটা জেলায় সঙ্কল্প যাত্রা হোঁচট খাওয়ায় শাসক দলকেই নিশানা করেছে বিজেপি। তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অন্যতম সম্পাদক কনিষ্ক পন্ডা বলেন, “ বিজেপির এই কর্মসূচি নিয়ে তৃণমূলের কোনও মাথাব্যথা নেই। আর এই কর্মসূচি হবে কি না, তা পুলিশের বিষয়। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই।’’