তমলুকে শুভেন্দু। নিজস্ব চিত্র।
৫১২ বছর আগে তমলুক শহরে পা রেখেছিলেন চৈতন্যদেব। আর তার জন্যই বুধবার তমলুক শহর পরিক্রমার আয়োজন করেন মহাপ্রভু মন্দির কর্তৃপক্ষ। সেই শোভাযাত্রায় বিজেপি নেতা তথা উৎসব কমিটির সভাপতি শুভেন্দু অধিকারীকে দেখা গেল অন্য রূপে। বৈষ্ণবদের মতো কপালে রসকলি আর গলায় রজনিগন্ধার মালা। তবে চৈতন্য স্মরণ অনুষ্ঠানেও ‘রামরাজ্য’ চাইলেন শুভেন্দু।
শহরের রাখাল মেমোরিয়াল এলাকা থেকে মহাপ্রভুর বিশাল মূর্তি নিয়ে শোভাযাত্রা শুরু হয়। যায় পার্বতীপুরের মহাপ্রভু মন্দিরে। মিছিলের শুরু থেকেই অনুগামীদের নিয়ে ছিলেন শুভেন্দু। মিছিলে অংশ নেওয়া প্রবীণদের অনেকের পা ছুঁয়ে প্রণাম করতেও দেখা যায় শুভেন্দুকে। সেই সঙ্গে তমলুক শহরের ভিতর দিয়ে মিছিল যাওয়ার সময় আশপাশের বাড়িতে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের দেখে হাসিমুখে নমস্কারও জানান তিনি। শোভাযাত্রায় হাঁটার সময়েই শুভেন্দু সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এই অনুষ্ঠানে দলমত নির্বিশেষে মহাপ্রভুর ভক্তরা এসেছেন। তাই এখানে তিনি কোনও রাজনৈতিক মন্তব্য করবেন না। তবে পরে তাঁর গলাতেই উঠে আসে রাম নাম। রামরাজ্য গঠনের জন্যই তাঁর লড়াই উল্লেখ করে বলেন, ‘‘পরশুরামও রামরাজ্য চেয়েছিলেন। রামরাজ্য মানে যেখানে কেউ ক্ষুধা পেটে ঘুমবে না, প্রত্যেকের মাথায় পাকা ছাদ থাকবে। শিল্প আসবে, কাজ পাবে যুবক যুবতীরা।’’ এর পাশাপাশি ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি অপশব্দ নয় বলেও বুধবার দাবি করেন তিনি।
শুধু শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়াই নয়, শেষে মহাপ্রভু মন্দিরে ভোগ খেতে আসা মানুষদের নিজে হাতে খিচুড়ি পরিবেশন করেন শুভেন্দু। শুভেন্দুর দাবী, তিনি সাধারণ মানুষের জন্য সর্বদা কাজ করে চলেছেন। করোনা কালে ভারত সেবাশ্রম সংঘের সঙ্গে হাত মিলিয়ে লক্ষাধিক মানুষের মুখে অন্ন তুলে দিয়েছেন তিনি।
বুধবার শুভেন্দুর ‘রামরাজ্য’ মন্তব্য নিয়ে সরব হয়েছে জেলা তৃণমূল। দলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র জানিয়েছেন, "এটা শুভেন্দুবাবুর ব্যক্তিগত মত। তিনি তাঁর কথা বলছেন, তবে আমি বলব ঝাড়খণ্ডে তো রামরাজ্য হয়েছে। সেখানে ১৫ বছর ওঁরা ক্ষমতায় ছিলেন। ওই সময় প্রতি বাড়ির মাথায় ছাদ, প্রতি বাড়িতে আলো পৌঁছেছে কিনা সেখানে গিয়ে দেখে আসুন। গুজরাটেও প্রতি মানুষের মাথায় আজও ছাদ হয়েছে কিনা গিয়ে দেখুন।"