(বাঁ দিকে) হুমায়ুন কবীর। শুভেন্দু অধিকারী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে ঘিরে তাঁর একের পর এক হুঁশিয়ারির প্রেক্ষিতে তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে চিঠি দিয়েছে ডাক্তারদের সংগঠন আইএমএ। এই প্রেক্ষিতে হুমায়ুনকে তোপ দাগলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি হুঁশিয়ারি দিলেন, রাজ্যে বিজেপির সরকার তৈরি হলে প্রাক্তন মন্ত্রীকে ‘উল্টো করে ঝুলিয়ে সোজা করা’ হবে। রবিবার নিজের বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মন কি বাত’-এর সম্প্রচার মঞ্চ থেকে শুভেন্দুর মন্তব্য, “এই সমস্ত লোককে কী করে উল্টো করে ঝুলিয়ে সোজা করতে হয়, সেটা বিজেপি সরকারে এলে করে দেখাব।” পাল্টা শুভেন্দুকে তোপ দেগে হুমায়ুন বলেছেন, বিজেপি বিধায়ক যেন অতীত মনে রাখেন।
আরজি কর-কাণ্ডের পর রাজ্য জুড়ে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে কটাক্ষ করে একের পর এক কড়া মন্তব্য করে বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশকে প্রায় বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট আন্দোলনের সমালোচনা করছেন। তাঁর বিভিন্ন মন্তব্যের জন্য বহরমপুর থানায় জামিন অযোগ্য ধারায় মামলাও হয়েছে। কিন্তু তার পরেও হুমায়ুন জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘‘ওদের যেমন আন্দোলন করার অধিকার আছে, বাংলায় তৃণমূলেরও ৩ কোটি ভোটার আছে। ১০ হাজার মাঠে নামলে কী হবে, তখন বুঝবে।’’ রবিবার তাঁর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে চিঠি প্রসঙ্গেও তৃণমূল বিধায়ক জানান, অপরাধ না-করে জেলে যেতে হলে তিনি যাবেন। কিন্তু জেল থেকে ফিরে এসে অপরাধ করে কুণ্ঠাবোধ করবেন না। এই প্রেক্ষিতে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরব হন শুভেন্দু। তিনি বলেন, “উনি সব সময় এমন বিতর্কিত কথা বলে থাকেন। ইউসুফ পাঠানকে (বহরমপুর কেন্দ্রে) যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের প্রার্থী করেছিলেন তখনও বিতর্কিত কথাবার্তা বলেছেন। আসলে উনি এমনটা করেন বাজার মাত করা এবং প্রচারে থাকার জন্য। তাই এঁদের নিয়ে কোনও কথা বলাই উচিত নয়।”
আরজি করে মহিলা চিকিৎসকে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, “মহারাষ্ট্রের বদলাপুরে একেবারে ‘রামনাম সত্যা হ্যায়’ করে দিয়েছি ধর্ষককে। অসমে জল খেতে খেতে রামনাম করে দিয়েছি। আর এখানে ধর্ষকদের ‘প্রোটেকশন’ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরা। আরজি কর মামলায় পুলিশ, ডাক্তার, ধর্ষক একসঙ্গে জেলে! এটা লজ্জার।” তিনি আরও বলেন, ‘‘এই রাজ্যে আরজি কর, সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের ঘটনা ঘটছে কেবলমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্যই। উনি যত দিন ক্ষমতায় আছেন, তত দিন রাজ্যের এই পরিস্থিতির বদল হবে না।”
অন্য দিকে, শুভেন্দুকে পাল্টা আক্রমণ করেছেন হুমায়ুন। তিনি বলেন, ‘‘এক সময় ছ’টা জেলার পর্যবেক্ষক (তৃণমূলে) ছিলেন উনি। মুর্শিদাবাদে এমন তাড়া করেছিলাম যে পালিয়েছিলেন। আমার নামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভুল বুঝিয়েছিলেন। কিন্তু নির্দল হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে দেখিয়েছি। এখন উনি (শুভেন্দু) বিরোধী দলে। এখন কী অবস্থা হবে জানেন তো?’’