আক্রান্ত: ময়নায় ব্লক অফিসে মনোনয়ন জমা দিতে এসে আক্রান্ত বাম কর্মীরা। সোমবার নিজস্ব চিত্র
সপ্তাহন্তের ছুটির আমেজের মধ্যেই উত্তেজনা ছড়াল পর্যটন শহর দিঘায়। রবিবার রাতে দলীয় বৈঠক চলাকালীন বিজেপি কর্মীদের উপর তৃণমূলের হামলার অভিযোগ উঠেছে। দাবি, রামনগর–১ বিজেপি মণ্ডল সভাপতি তপন মাইতিকে বেধড়ক পেটানো হয়। জখম অবস্থায় তাঁকে দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তপনবাবুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সোমবার তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের পাল্টা অভিযোগ, তৃণমূলের কর্মীদের লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয়। এতে তাদের দু’জন কর্মী জখম হয়েছেন।
ঘটনার সুত্রপাত রবিবার রাতে। নিউ দিঘার একটি বেসরকারি গেস্ট হাউসে সোমবারের মনোনয়ন সংক্রান্ত বৈঠক ছিল বিজেপি’র। অভিযোগ, সে সময় একদল তৃণমূল সমর্থক ভিতরে ঢুকে ব্লক তপনবাবুর মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে। আহত হয় আরও দু’জন।
বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মলয় সিনহা বলেন, ‘‘দলীয় কর্মীদের মনোনয়ন করতে দেবে না বলে হামলা চালিয়েছে শাসকদল।’’ স্থানীয় তৃণমূল নেতা সুশান্ত পাত্রের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘রাস্তায় আমাদের কয়েক জনকে দেখে কটূক্তি করেছিল বিজেপি। প্রতিবাদ করায় দলের দু’জনকে পিটিয়েছে বিজেপি কর্মীরা। আহত দুই তৃণমূল সমর্থক তমলুক জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’’ রবিবার রাতেই দু’দল পরস্পরের বিরুদ্ধে দিঘা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।
শাসক-বিরোধী দ্বন্দ্ব এখানেই শেষ নয়। সোমবারও মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে সেই রেশ গড়িয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। এ দিন শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক অফিসে বামফ্রন্ট প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে জমায়েত থাকা তৃণমূলের কর্মীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। দাবি, এতে পাঁচজন মহিলা-সহ ১৬ জন বামফ্রন্ট প্রার্থী-কর্মীরা আহত হয়েছেন। এক মহিলা প্রার্থীর শ্লীলতাহানি করা হয় বলেও অভিযোগ। সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহির অভিযোগ, ‘‘ব্লক অফিসের সামনে পুলিশের পাশেই তৃণমূলের সশস্ত্র লোকজন হামলা করেছে।’’ তপন হাজরা নামে এক বিজেপি কর্মী চোখে আঘাত লেগে আহত হন বলে অভিযোগ। তাঁকে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
ময়নায় বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস প্রার্থীরা একসঙ্গে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, ব্লক অফিসের সামনেই জমায়েত থাকা তৃণমূল কর্মীরা তাদের উপরে আক্রমণ চালায়। স্থানীয় সূত্রের খবর, সংঘর্ষে আট জন মহিলা, বামফ্রন্টের ২৩ জন এবং কংগ্রেসের চার জন কর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের ময়না ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছে। কার্যত একই ছবি দেখা গিয়েছে পটাশপুর ২ ব্লকে। এই প্রসঙ্গে ওই ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি চন্দন সাউ বলেন, ‘‘বিজেপি চটকদারি রাজনীতি করছে। হেরে যাবে বলে মিথ্যা অভিযোগ করছে।’’