সংখ্যালঘু ভোটে সাফ বিজেপি

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, এনআরসি নিয়ে বিজেপির একরোখা মনোভাব এবং এনআরসি নিয়ে তৃণমূলের চরম বিরোধিতারই প্রভাব পড়েছে উপ- নির্বাচনে।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:০৫
Share:

পাঁচবেড়িয়ার বুথে ভোটের লাইন। বুথমুখী বৃদ্ধও। নিজস্ব চিত্র

খড়্গপুরে ২০ হাজারেরও বেশি ভোটে জিতেছে তৃণমূল। এই ভোটের অনেকটাই এসেছে শহরের সংখ্যালঘু এলাকা থেকে। এ বার ভোটে সংখ্যালঘু এলাকায় কার্যত ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গিয়েছে বিজেপি। এক- একটি বুথে তৃণমূল যেখানে ৮০০- ৮৫০ ভোট পেয়েছে, সেখানে বিজেপি পেয়েছে সাকুল্যে ৮- ১০টি ভোট!

Advertisement

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, এনআরসি নিয়ে বিজেপির একরোখা মনোভাব এবং এনআরসি নিয়ে তৃণমূলের চরম বিরোধিতারই প্রভাব পড়েছে উপ- নির্বাচনে। বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশ মানছেন, ‘‘এনআরসি নিয়ে মানুষকে বোঝানোয় ঘাটতি থেকে গিয়েছে। তৃণমূল কিছু মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির দাবি, ‘‘এনআরসি নিয়ে বিজেপিই মানুষকে আতঙ্কে রেখেছে। ওরা ধর্মের নামে মানুষকে ভাগ করতে চাইছে। ভোটে মানুষ ওদের উপযুক্ত জবাব দিয়েছে।’’

খড়্গপুরের পাঁচবেড়িয়া ও তার আশেপাশের এলাকা সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা জানাচ্ছেন, রেলশহরের ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩টি ওয়ার্ড সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। এই তিনটি ওয়ার্ডেই বিপুল ভোট পেয়েছে তৃণমূল। এই ৩টি ওয়ার্ডে বিজেপির থেকে কত ভোটে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল? বুথ- ভিত্তিক ফলের পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে, সবমিলিয়ে ১২ হাজার ভোটে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। যেখানে তৃণমূলের প্রদীপ সরকারের জয়ের ব্যবধান ২০ হাজার। সব দেখে তৃণমূলের এক জেলা নেতা মানছেন, "ওই এলাকাগুলিতে এত ভোট না পেলে ফল কী হত বলা মুশকিল!’’

Advertisement

‘‘যে গরু দুধ দেয় তার লাথি খাওয়াও ভাল।’’— মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমন মন্তব্যে এক সময় বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল। তৃণমূলের এক জেলা নেতার পর্যবেক্ষণ, ‘‘দিদির মন্তব্য যে ভুল ছিল না ভোটের ফলেই তা প্রমাণিত!’’ অনেকে মনে করেছিলেন, তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে খানিক থাবা বসাবে কংগ্রেস- বাম জোট। কারণ, জোটও এনআরসি- র তীব্র বিরোধিতা করেছে। ভোটের ফল জানাচ্ছে, তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে আঁচড় কাটতে পারেনি জোট।

সংখ্যালঘু ভোট টানতে অবশ্য চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি তৃণমূল। মাস তিনেক আগে থেকেই রেলশহরের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে এনআরসি নিয়ে প্রচার শুরু করেছিল তৃণমূল। তৃণমূলের এই প্রচারের মোকাবিলায় পাল্টা প্রচারে সে ভাবে দেখা যায়নি গেরুয়া- শিবিরকে। শুভেন্দু অধিকারীর নির্দেশে খড়্গপুরের সংখ্যালঘু এলাকায় গিয়ে প্রচার করেছেন কেশপুরের মহম্মদ রফিকও। তিনি মানছেন, ‘‘শহরের তিনটি ওয়ার্ডে দলের প্রার্থী ১২ হাজার ভোটে এগিয়ে রয়েছেন।’’ তৃণমূলের অনুকূলে এত বিপুল ভোট? রফিক বলেন, "ওই সব এলাকায় মানুষ বিজেপির উপর তিতিবিরক্ত।

ক্ষোভে ফুঁসছেন। ইভিএমে সেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement