—প্রতীকী চিত্র।
বড়দিনের ঠিক আগে, ২৪ ডিসেম্বর কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠে’র আয়োজন করতে চলেছে বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। রাজনৈতিক মহলের মতে, লোকসভা নির্বাচনের আগে এই আয়োজনের পিছনে বড় ভূমিকা রয়েছে বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবারের। সেই সমাবেশে যোগ দিতে প্রবীণ ও নবীনদের সঙ্গে প্রস্তুতি নিচ্ছে নাবালকেরাও। সঙ্ঘ সূত্রে খবর, শুধুমাত্র ঘাটাল থেকেই প্রায় ১৫ জন নাবালকও ওইদিন ব্রিগেডে গিয়ে সমবেত গীতা পাঠে যোগ দেবে।
ওই কর্মসূচি ঘিরে গেরুয়া শিবিরে এখন সাজো সাজো রব। রাজ্য জুড়ে চলছে তার প্রস্তুতি। ওই কর্মসূচিতে আসতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ২৪ ডিসেম্বর দিনটি এমনিতেই গীতা জয়ন্তী হিসেবে পালন হয়। এই কর্মসূচি সফল করতে ঘাটাল-সহ গোটা পশ্চিম মেদিনীপুরে জেলা জুড়েই সঙ্ঘ ও সঙ্ঘ অনুসারী একাধিক সংগঠন মাঠে নেমেছে। গীতা পাঠে অংশ নিতে আগ্রহীদের তালিকা তৈরি হচ্ছে। অনেকে নিজে থেকে আগ্রহী হয়ে স্থানীয় মঠ-মন্দির কিংবা সনাতন ট্রাস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করে তালিকায় নাম তুলেছেন। সঙ্গে চলছে গীতা পাঠের প্রশিক্ষণও।
জানা গিয়েছে, ঘাটাল ব্লক থেকে ছ’শো জনে ব্রিগেডে গীতা পাঠের আসরে যাওয়ার কথা। তার মধ্যে চারশোর কাছাকাছি নাম নথিভুক্ত হয়ে গিয়েছে। বাকি নাম নথিভুক্তি চলছে। প্রাথমিক তালিকায় যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ২০-৩০ শতাংশের বয়স আঠারো থেকে পঁচিশের মধ্যে। দশ থেকে পনেরো জন নাবালক ছেলেও যাওয়ার জন্য তৈরি। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই পড়ুয়া। ওই নাবালকদের মধ্যে রয়েছে সপ্তম শ্রেণির এক পড়ুয়াও। ঘাটালের এক গ্রামের বাসিন্দা ওই পড়ুয়ার এক আত্মীয় বলছিলেন, “ও প্রথম থেকেই গীতা নিয়ে খুব আগ্রহী। বাড়িতে সেরকম চর্চা হয়, এমনটা নয়। তবে আলোচনা হয়। তার থেকেই হয়তো আগ্রহ তৈরি হয়েছে।”
ঘাটালে সংস্কৃত ভারতী-সহ সঙ্ঘের একাধিক শাখা সংগঠনের উদ্যোগে গীতা প্রশিক্ষণ হয়। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফেও নানা মঠে সঠিক উচ্চারণে গীতা পাঠ শেখানোর ব্যবস্থা রয়েছে। সঙ্ঘের পশ্চিম মেদিনীপুরের এক কার্যকতা বলছেন, ‘‘প্রবীণ মানুষদের পাশাপাশি নবীন প্রজন্মের অনেকের মধ্যেই এই কর্মসূচি নিয়ে আগ্রহ রয়েছে। অনেকে নিজে থেকেই আয়োজকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।’’ তিনি জানান, আগ্রহীদের অনেকে গীতা কিনে পড়ার অভ্যাস তৈরি করছেন। গীতা চর্চা করছেন। কেউ কেউ শিক্ষক অথবা বাবা-মায়ের কাছে গীতা পড়ছেন।
জানা গিয়েছে, ব্রিগেডে গীতা পাঠে আগ্রহীরা নিজেদের মতো করেই সেদিন সভাস্থলে যাবেন। নাবালকেরা যাবে বাবা অথবা পরিচিত কারও সঙ্গে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের জেলা সম্পাদক নীলকমল পাল বলেন, “ঘাটাল থেকে ছ’শো জনের কাছাকাছি গীতা পাঠের আসরে অংশ নেবেন। ইতিমধ্যে চারশোর বেশি নাম নথিভুক্ত করা হয়ে গিয়েছে। দশ-পনেরো জন নাবালকও যাবে ঘাটাল থেকে। তাদের সবাই নিজেদের মতো করে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।”