ধর্মতলার পথে তৃণমূল সমর্থকেরা —ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের ‘শহিদ দিবস’ পালন কর্মসূচি রয়েছে আজ, রবিবার। সেই কর্মসূচিতে যাতে নির্বিঘ্নে শাসকদলের নেতা-কর্মীরা কলকাতা যেতে পারেন, সে জন্য পূর্ব মেদিনীপুরে পণ্যবাহী যান চলাচল সীমাবদ্ধ করল জেলা প্রশাসন। ১১৬ এবং ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ছ’টি জায়গায় শনিবার রাত ১টা থেকে থেকে রবিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত যান চলাচল সীমাবদ্ধের বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করেছেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি। এ নিয়ে বিজেপি- তৃণমূলের মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়ে গিয়েছে।
সদ্য লোকসভা নির্বাচনে জেলার দুই আসন ভরাডুবি হয়েছে ঘাস ফুল শিবিরের। তবুও একুশে জুলাইয়ের কর্মসূচিকে সামনে রেখে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলা থেকে প্রচুর লোক নিয়ে যেতে চাই তৃণমূল। আপাতত ২৫টি ব্লক এবং পাঁচটি পুরসভা থেকে ৫০ হাজার কর্মী নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা তারা নিয়েছে। তৃণমূলের লোকজন যাতে নির্বিঘ্নে কলকাতার উদ্দেশ্যে যেতে পারেন সে জন্য রাস্তায় যানজট এড়াতে ১৮ জুলাই জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য জেলাশাসকের কাছে আবেদন জানানো হয়।
ওই আর্জির ভিত্তিতে জেলাশাসক ১৯৮৮ সালের মোটর ভেহিক্যাল আইনের ১১৫ এবং ১১৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী ১১৬ এবং ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কে পণ্যবাহী যান চলাচল সীমাবদ্ধ করেছেন। আপাতত ভবানীপুর থানার অন্তর্গত সিটি সেন্টার, দোকানগড়া, মহিষাদলের কাপাসবেড়িয়া, তমলুকের মিলননগর, কোলাঘাটের হলদিয়া মোড় (১) ও (২) এবং পাঁশকুড়ার মেছগ্রামে পণ্যবাহী যান চলাচল সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। তবে জেলার জাতীয় সড়কগুলিতে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে জেলাশাসকের এই নির্দেশিকায় সরব হয়েছে পদ্ম শিবির।
বিজেপির জেলা (তমলুক) সাধারণ সম্পাদক আনন্দময় অধিকারী বলছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো কেন্দ্রীয় স্তরের নেতাদের কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষ যাতে অংশগ্রহণ করতে না পারেন, সে জন্য সব ধরনের বাধা দেয় রাজ্য সরকার। এখন তৃণমূলের কর্মসূচিতে যাতে ওদের নেতা-মন্ত্রীরা-কর্মী-সমর্থকেরা কলকাতা যেতে পারেন, সে জন্য পথ প্রশস্ত করার দায়িত্ব নিয়েছে প্রশাসন।’’ তৃণমূলের দাবি, বিজেপি এই বিষয়ে অহেতুক রাজনীতি করছে। আর জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি বলছেন, ‘‘যানজট, দুর্ঘটনার আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে পুলিশ চাইলে বিশেষ বিশেষ রাস্তায় যান চলাচল সাময়িকভাবে সীমাবদ্ধ করে। এক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছে।’’
এদিকে, শিল্প শহরে শাসকদলের ভাঁড়ারে টান পড়েছে। দল থেকে দেওয়া হচ্ছে না তেমন আর্থিক সাহায্য। অগত্যা কর্মীরা ট্রেনে যাওয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গত বছরের প্রায় ১০০টি গাড়ি গিয়েছিল হলদিয়া পুর এলাকা থেকে। এবারে তা হয়েছে ৩০-৪০টি। শহর তৃণমূলের সভাপতি মিলন মণ্ডল বলেন, ‘‘দল থেকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হচ্ছে না। ট্রেনেই ভরসা করেছেন তৃণমূল কর্মীরা।’’