Politics

বন্দরে প্রভাব বাড়াতে সক্রিয় মজদুর সঙ্ঘ

২২ ফেব্রুয়ারি শিল্পশহর হলদিয়াতে বিএমএসের বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সংগঠনের সদস্যদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হলদিয়া শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:৪৪
Share:

—প্রতীকী ছবি।

নজরে লোকসভা ভোট। তাই বিভিন্ন কারখানা এবং বন্দরে শ্রমিক সংগঠনে প্রভাব বিস্তারে তৎপর হচ্ছে আরএসএস (রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ) সমর্থিত শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় মজদুর সংঘ। গোটা রাজ্যে সদস্য সংখ্যা এক লক্ষ ছুঁয়ে ফেলেছে বলে বিএমএসের তরফে দাবি করা হয়েছে। ইতিপূর্বে হলদিয়া শিল্পাঞ্চল এলাকায় বিএমএসের ২৬টি নতুন ইউনিয়নকে অনুমোদন দিয়েছে শ্রম দফতর। যা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে শ্রমিক মহল।

Advertisement

২২ ফেব্রুয়ারি শিল্পশহর হলদিয়াতে বিএমএসের বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সংগঠনের সদস্যদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তারও কয়েকদিন আগে শঙ্করপুরে একটি সাংগঠনিক সভা করেন বিএমএসের নেতারা। ওই কর্মসূচিতেই আরএসএস সমর্থিত শ্রমিক সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ৪০ টি ইউনিয়ন রয়েছে। যার সদস্য সংখ্যা আড়াই হাজারের কাছাকাছি। এর মধ্যে, শুধু হলদিয়া শিল্পাঞ্চল এলাকাতেই ২৬ টি ইউনিয়নে ১,৭০০ র কাছাকাছি সদস্য রয়েছেন। এবং গোটা রাজ্যে ৪৩৮ টি ইউনিয়ন রয়েছে। এ বছর ৩১ জানুয়ারি সদস্য সংখ্যা নবীকরণ প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। তারপর গোটা রাজ্যের সর্বসাকুল্যে এক লক্ষের বেশি সদস্য অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চল হচ্ছে হলদিয়া। একই জেলাতে রয়েছে বেশ কয়েকটি মৎস্য বন্দর। লক্ষাধিক মানুষ সমুদ্রে মাছ ধরতে যান। আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে সেইসব শ্রমজীবী মানুষদের মন পেতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। জেলায় কাঁথি এবং তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে মৎস্যজীবীদের পাশাপাশি কারখানা এবং বন্দরের শ্রমিকরা নির্ণায়ক শক্তি হতে চলেছে বলে মনে করেন সব রাজনৈতিক দল। গত বিধানসভা ভোটে হলদিয়াতে প্রথমবার পদ্ম প্রতীকে জয়ী হয়ে বিধায়ক হন তাপসী মণ্ডল। লোকসভা ভোটের আগে বন্দর এবং শিল্পশহর হলদিয়াতে বিএমএসের সদস্য সংখ্যা এক লাফে বৃদ্ধি পাওয়াতে উজ্জীবিত গেরুয়া শিবির। এ প্রসঙ্গে সংগঠনের রাজ্য সভাপতি প্রদীপ কুমার বিজলী বলছেন, "তৃণমূলের আমলে বন্দর থেকে কল কারখানা সব জায়গাতে শ্রমিকেরা শোষিত এবং বঞ্চিত। শ্রমিকদের নাম করে তাদের সমস্ত সুযোগ-সুবিধে ভোগ করছেন রাজ্যের শাসক দলের নেতারা। তাই এখন দলে দলে তারা আমাদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন।" সেই অর্থে বেশ কয়েক বছর ধরে শাসকদলের শ্রমিক সংগঠনে সদস্য সংগ্রহ অভিযান হয়নি বলে আইএনটিটিইউসির একাংশ সূত্রের খবর। তবে সংগঠনের তমলুক সংগঠনিক জেলা সভাপতি চন্দন কুমার দে বলছেন,"সেরকম পুনর্নবীকরণ হয় না ঠিক। তবে এইচ পদ্ধতিতে প্রতি বছর নবীকরণ করা হয়।"

Advertisement

শাসক দলের তরফে দাবি করা হচ্ছে, সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে সুবিধা প্রাপকেরা দলের সঙ্গে যুক্ত। বাম জমানায় ২০০০ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত এই খাতে ন'কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর সেই বরাদ্দ বহুগুণ বৃদ্ধি করেছে তৃণমূল। আপাতত ১ কোটি ৬৪ লক্ষ পরিবার সেই সুবিধে পাচ্ছেন। যদিও ভারতীয় মজদুর সংঘের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টিকে পাত্তা দিতে রাজি নয় আইএনটিটিইউসি।

সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, "সংগঠিত এবং অসংগঠিত মিলিয়ে আড়াই কোটির কাছাকাছি সদস্য রয়েছে। তার মধ্যে কেউ সামান্য কিছু সদস্য সংগ্রহ করে শ্লাঘা অনুভব করছেন। বাম জমানা এবং কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের আমলে তাদের কী হাল হয়েছে তা শ্রমিকেরা ভালো ভাবে বুঝেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের পাশে যে ভাবে দাঁড়িয়েছেন তাই শ্রমিকেরা লোকসভা ভোটে জেলা দু’টি আসনে তৃণমূল প্রার্থীদের দুহাত তুলে আশীর্বাদ করবেন।"

তবে, হলদিয়া শিল্পাঞ্চল এলাকায় আইএনটিটিইউসি থেকে একাংশ বিএমএসে যুক্ত হয়েছেন। তলে তলে সংগঠনের অনেকেই গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন বলে শাসকদলের শ্রমিক সংগঠনের একাংশ সূত্রের খবর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement