ব্যস্ত: দলীয় কার্যালয়ে পশুপতি দেবসিংহ। নিজস্ব চিত্র
কর্মীদের কাছে তিনি মধুসুদন দাদা।
ছেলেমেয়ের স্কুলে ভর্তির সমস্যা হোক বা চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞের খোঁজ— কর্মীরা শেষপর্যন্ত ছুটে যান তাঁর কাছেই। তিনি পশুপতি দেবসিংহ। গড়বেতা ২ নম্বর ব্লক অর্থাৎ গোয়ালতোড়ে বিজেপির মুখ। সেনাপতিও। গোয়ালতোড়ের পিংবনি অঞ্চলের কাদোশোল গ্রামের বাসিন্দা ৪৯ বছরের পশুপতি এ বার জেলা পরিষদে বিজেপির প্রার্থী। নিজে একটা আসনে প্রার্থী হলেও তাঁর নজর ব্লকের প্রতিটি আসনের দিকে। গোয়ালতোড়ে ১৯৯১ সাল থেকে বিজেপির সংগঠন গড়ে তুলেছেন। জোগারডাঙার সুদীপ পাল, সাধুসন্ত মাঝি-সহ কয়েকজন বিজেপি কর্মী বলেন, ‘‘তিনি এতদিন ধরে সকলের সুখে দুঃখে, বিপদেআপদে যে ভাবে থেকেছেন, তাঁর সামনে আমরা কিছু বলতে পারি না।’’ দলীয় কর্মীদের মধ্যে প্রার্থী হতে না পারার যন্ত্রণা আছে। পশুপতিদা’র সামনে এলে সব উধাও।
১৯৯৮তে বিজেপির টিকিটে দাঁড়িয়ে পশুপতিবাবু পঞ্চায়েতে জিতেছিলেন একবার। পরবর্তীকালে বিজেপির নানা পদে থেকে এখন তিনি জেলার সহ সভাপতি। কেমন হবে লড়াই? পশুপতির কথায়, ‘‘তৃণমূলের চোখরাঙানিকে উপেক্ষা করে দু’ টি বাদে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে প্রার্থী দিয়েছি। পঞ্চায়েত সমিতির ২৫টি আসনেই বিজেপির প্রার্থী আছে, জেলা পরিষদের আসনে তো আছেই।’’
নীল জিন্সের সঙ্গে সাদা সুতির জামা পড়তে ভালোবাসেন। কিন্তু অফিসে নীল-সাদা রঙে কিন্তু আপত্তি পশুপতিবাবুর। রাজনৈতিক মতবিরোধ রয়েছে। রয়েছে শ্রদ্ধাও। গোয়ালতোড়ের তৃণমূল নেতা দুলাল মণ্ডল বলেন, ‘‘পশুপতিবাবু ভাল সংগঠক। ওঁর সঙ্গে সম্পর্ক ভাল। তবে এখন যাঁদেরকে নিয়ে চলছেন তাঁরাই বিপদের কারণ হবে।’’ বিপদ তো কম আসেননি জীবনে। ছত্রধর মাহাতো পশুপতিবাবুর পিসতুতো দাদা। একসময় সেই দাদার হাত ধরে জনসাধারণ কমিটির হয়ে আন্দোলন করেছিলেন। কয়েকটা মামলাতেও নাম জড়ায় তাঁর। তাঁকে মাওবাদীদের সঙ্গে জড়িয়ে একসময় প্রচার শুরু হয়েছিল। কিন্তু কোনও প্রচারই গায়ে মাখেন না তিনি। পশুপতিবাবুর কথায়, ‘‘কে কী বলল কিছু এসে যায় না।’’