ধৃত আশুতোষ মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র
স্কুলেরই একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে শুক্রবার গ্রেফতার করা হয়েছিল প্রধান শিক্ষককে। ঘটনার তদন্তে এ বার স্কুলে গেলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের সহকারি বিদ্যালয় পরিদর্শক। শনিবার সবংয়ের ওই স্কুলে যান জেলার সহকারি বিদ্যালয় পরিদর্শক অতীশ সামন্ত। এ দিন তিনি বেলদা থানাতেও গিয়েছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আশুতোষ মণ্ডলকে গ্রেফতার করে বেলদা থানার পুলিশ। একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ভয় দেখিয়ে একাধিক বার ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। গাড়িতে ওই নাবালিকা ও আশুতোষকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে হাতেনাতে পাকড়াও করেছিলেন গ্রামবাসীরা। তার পর ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়। গ্রেফতার করা হয় তাকে। শুক্রবার ধৃতকে এক দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠিয়েছিল সিজেএম আদালত। শনিবার তাকে মেদিনীপুরে পকসো আদালতে তোলা হলে বিচারক তিন দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। নির্যাতিতা ছাত্রীর গোপন জবানবন্দিও রেকর্ড করা হয়।
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা বিচারে পৃথকভাবে তদন্তে নেমেছে শিক্ষা দফতর। এ দিন দফতরের জেলা সহকারি বিদ্যালয় পরিদর্শক পড়ুয়া, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রধান শিক্ষক গ্রেফতারের পরে স্কুল ঠিক ঠাক চলছে কিনা সে বিষয়েও এ দিন তিনি খোঁজ নিয়েছেন। পরে জেলার সহকারি বিদ্যালয় পরিদর্শক অতীশ বলেন, “সকলেই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ জানিয়েছেন। ওই শিক্ষক অশ্লীল আচরণ করত বলে ছাত্রীরাও আমাকে বলেছে। রিপোর্ট তৈরি করে দফতরে জমা দেব।”
বেলদা-র বিদ্যালয়ে যোগ দেওয়ার আগে ধৃত শিক্ষক কাজ করত নদিয়ার চাকদহের এক স্কুলে। সেখানে সে রসুল্যাপুর হাইস্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষক ছিল। ২০০০ সালের নভেম্বরে ওই শিক্ষক সেখানে যোগ দেয়। সহকারি প্রধান শিক্ষক হয় ২০১৫ সালে। গত ২২ জুলাই ‘লিয়েন’-এ যোগ দেয় বেলদার স্কুলে। প্রথমে সে এক বছরের লিয়েন বা ছুটি চেয়েছিল। কিন্তু চাকদহের স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি ৬ মাসের ছুটি মঞ্জুর করে। ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে সেই শিক্ষকের গ্রেফতার হওয়ার খবরে তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন রসুল্যাপুর এলাকার মানুষ, অন্য শিক্ষক ও পড়ুয়ারা। ওই শিক্ষক যদি ছাড়া পেয়ে যায় তা হলেও যেন কোনও দিন রসুল্যাপুরমুখী না হয়, সেই দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
রসুল্যাপুর বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী হালিমা খাতুন বলেন, “সকলেই জানেন, আমাদের বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রীর সঙ্গে তিনি খারাপ কাজ করেছেন। প্রমাণ না থাকায় তার বিরুদ্ধে কিছু করা যায়নি। আমার বোন এখনও ওই স্কুলে পড়ে। তার মতো এক জন শিক্ষক আমাদের বিদ্যালয়ে ফিরে আসুক, চাইছি না।” এক অভিভাবক ফজরুল হোসেন মণ্ডলের কথায়, “ওই শিক্ষক এখানেও খারাপ ব্যবহার করত। পড়ুয়াদের কুরুচিপূর্ণ কথা বলত। ছাত্রীদের সঙ্গে খারাপ ব্যাবহার করত।” বিদ্যালয়ের শিক্ষক অসীম বিশ্বাস বলেন, “ওই শিক্ষক বিভিন্ন মেয়েকে টার্গেট করত। এই রকম লোক শিক্ষক সমাজের কলঙ্ক।”
আদালত পরিদর্শন
ঘাটাল: ঘাটাল আদালত পরিদর্শন করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক। সঙ্গে ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জজ অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ কয়েকজন। শনিবার ওই আদালতে পরিদর্শন করার তার পরিকাঠামোর খোঁজও নেন তাঁরা। ঘাটালের আইনজীবীদের সাথে কথাও বলেন। আদালত পরিদর্শন করে ঘাটাল শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রস্তাবিত বিচারক আবাসন তৈরির জমি পরিদর্শনেও যান বিচারপতিরা।