অসম্পূর্ণ বাড়ি। নিজস্ব চিত্র।
লক্ষ্য ছিল পুরসভা এলাকার গরীব বাসিন্দাদের পাকা বাড়ি তৈরি করে দেওয়া। সেই কাজে ‘বাংলার বাড়ি’ নামে প্রকল্পে গরীব এবং কাঁচা বাড়ির মালিকদের জন্য সরকারিভাবে অর্থ বরাদ্দ করা হয়। তমলুক পুরসভায় ওই প্রকল্পের কাজ বেশ ঢিমেতালে চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
তমলুক পুর এলাকায় ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের কাজে ঢিমেতালে চলার জেরে গত সেপ্টেম্বরে রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর পুরসভা কর্তৃপক্ষকে কাজে গতি আনার নির্দেশ দিয়েছিল। তাতে পুর কর্তৃপক্ষ উপভোক্তা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন। কিন্তু এর পরেও পাকা বাড়ি তৈরির কাজে সেভাবে গতি আসেনি বলে অভিযোগ করছেন বিরোধী বিজেপি এবং কংগ্রেস নেতৃত্ব। প্রকল্পের উপভোক্তা তালিকায় বহু গরীব পরিবারের নাম না থাকায় সরকারি প্রকল্পের সুবিধা থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
কয়েকবছর আগে সমীক্ষা চালিয়ে তমলুক পুর এলাকায় উপভোক্তা পরিবারের তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। ওই সমস্ত উপভোক্তার জন্য তিন লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা করে খরচ বরাদ্দ হয়। যার মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার দেড় লক্ষ এবং রাজ্য সরকার এক লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা বরাদ্দ করে। আর সংশ্লিষ্ট পুরসভা ২৮ হাজার টাকা ও উপভোক্তা পরিবার ২৫ হাজার টাকা দেয়। প্রকল্পে তমলুক পুরসভা এলাকায় প্রায় ৬ হাজার পরিবারের নাম তালিকাভুক্ত রয়েছে। তালিকা ধরে ২০১৬ সাল থেকে ধাপে ধাপে পাকাবাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় দফায় মিলিয়ে প্রায় ৫ হাজার পাকাবাড়ি তৈরির কাজ হয়েছে। এখন চতুর্থ দফার কাজ চলছে। চতুর্থ দফায় মোট ৮০১ টি পাকাবাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই কাজ ঢিমেতালে চলছে বলে দাবি। তমলুকের বাসিন্দা তথা অসংগঠিত শ্রমিক কংগ্রেস জেলা চেয়ারম্যান শেখ জিয়াদ বলেন, ‘‘বাংলার বাড়ি প্রকল্পে উপভোক্তা তালিকায় গরমিল নিয়ে আমরা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। বিভিন্ন ওয়ার্ডে গরীব বাসিন্দাদের একাংশ ওই প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আর তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা উপভোক্তা তালিকা প্রকাশ না করে কারচুপি করেছে। পাকাবাড়ি তৈরির কাজে দেরি করছে।’’ বিজেপির তমলুক নগর মণ্ডল সভাপতি সুকান্ত চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘কেন্দ্র সরকার ‘হাউসিং ফর অল’ প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য অর্থ সাহায্য করছে। রাজ্য সরকার প্রকল্পের নাম বদলে ‘বাংলার বাড়ি’ তো করেছেই। এখন সময় মত ধাপেধাপে অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় বহু পাকাবাড়ি অর্ধনির্মিত অবস্থায় রয়েছে।’’
তৃণমূল পরিচালিত তমলুক পুরসভার চেয়ারম্যান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায় অবশ্য বলছেন, ‘‘বাংলার বাড়ি প্রকল্প ঢিমেতালে চলার অভিযোগ ঠিক নয়। গত বর্ষাকালে প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য ওই প্রকল্প ব্যহত হয়েছিল। পরে কাজে গতি এসেছে। উপভোক্তা তালিকা তৈরির জন্য সমীক্ষা হয়েছিল। তালিকায় গরমিলের অভিযোগও ভিত্তিহীন।’’