বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তমলুকে দুর্গা পুজোর কার্নিভাল। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস
জাঁকজমক করে জেলার পুজো কার্নিভাল হল, নেতা-মন্ত্রীরা উপস্থিত থাকলেন, ভিড়ও হল। কিন্তু কার্নিভালে অংশ নিল না পুরস্কারপ্রাপ্ত অনেক পুজো কমিটি। ফলে বিতর্ক থেকেই গেল।
বৃহস্পতিবার রাজ্যের অন্য জেলার সঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরেও দুর্গাপুজোর কার্নিভাল আয়োজন করা হয়েছিল জেলা সদর তমলুক শহরে মহকুমাশাসকের অফিসের প্রাঙ্গণে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কে এই অনুষ্ঠান হয়। হাসপাতাল মোড়ের কাছ থেকে নিমতলা মোড় পর্যন্ত সড়কের দু’পাশেই কয়েক হাজার মানুষের ভিড় ছিল।
কিন্তু এত আয়োজন সত্ত্বেও জেলার মাত্র ১৮টি দুর্গাপুজো কমিটি এ বছর কার্নিভালে অংশ নিতে এসেছিল। অনেক পুজো কমিটি সরকারের থেকে ডাক পেয়েও যায়নি। তমলুক, হলদিয়া, পাঁশকুড়া, মহিষাদল, নন্দকুমারের কিছু পুজো কমিটি এর মধ্যে থাকলেও কাঁথি ও এগরা মহকুমা থেকে কোনও দুর্গাপুজো কমিটি কার্নিভালে অংশ নেয়নি। এমনকি জেলা স্তরে ‘বিশ্ববাংলা শারদ সম্মান’ পুরস্কার প্রাপ্ত দুর্গাপুজো কমিটির অনেকেই কার্নিভালে অনুপস্থিত ছিল। সরকারি উদ্যোগে আয়োজিত দুর্গাপুজো কার্নিভালে অংশ নিতে পুজো কমিটিগুলির অনীহা নিয়ে স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন উঠেছে। কেউ-কেউ এর পিছনে রাজনৈতিক কারণ দেখছেন। তবে অন্য বেশ কয়েকটি কারণও সামনে উঠে আসছে।
ময়না’র বলাইপন্ডার পশ্চিম ময়না সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি এ বছর সমাজ সচেতনতা বিভাগে বিশ্ববাংলা শারদ সম্মান পেয়েছে। কিন্তু তারা জেলার কার্নিভালে অংশ নেয়নি। পুজো কমিটির সম্পাদক সুব্রত মালাকার বলেন, ‘‘কলকাতার কুমোরটুলি থেকে দুর্গা প্রতিমা নিয়ে আসার পথে তমলুকের নিমতৌড়িমোড় থেকে আমাদের মণ্ডপ পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার পথে বিদ্যুতের তার, গাছপালায় বাধা পেয়ে খুবই সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। কার্নিভালে অংশ নিতে হলে ফের একই সমস্যায় পড়তে হবে। তাই জেলাপ্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের কার্নিভালে যোগ দিতে বলা হলেও আমরা অংশ নিতে পারিনি।’’
শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে নোনাকুড়ি সাংস্কৃতিক সংস্থার থিমের দুর্গাপুজা হয়েছিল। সরকারি ভাবে আর্থিক সাহায্য পেয়েছে এই পুজো কমিটি। কিন্তু জেলার কার্নিভালে তারা অংশ নেয়নি।দুর্গাপুজো কমিটির কর্তা তথা তৃণমূল নেতা জয়দেব বর্মণ বলেন,’ ’কার্নিভালে অংশ নেওয়ার জন্য পুলিশ-প্রশাসনের তরফে আমাদের বলা হয়েছিল। কিন্তু কার্নিভালে যাওয়ার জন্য প্রতিমা বহনের গাড়ি ভাড়া এবং সাংস্কৃতিক দল তৈরি করে অনুষ্ঠান করার মতো টাকার অভাব রয়েছে আমাদের। তাই কার্নিভালে যোগ দিতে পারা যায়নি।’’
এ দিকে দুর্গাপুজোর কার্নিভালের জন্য এ দিন দুপুর থেকেই হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কে তমলুক শহরে যাতায়াতকারী বাস, লরি-সহ ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।মেচেদার দিক থেকে আসা বাসগুলিকে শহরের মানিকতলা মোড় থেকে রাধামনির দিকে হলদিয়া-মেচেদা জাতীয় সড়কের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। হলদিয়ার দিক থেকে আসা বাসগুলিকে হলদিয়া- মেচেদা জাতীয় সড়কের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। ফলে নন্দকুমারের দিক থেকে তমলুক শহরে আসার ক্ষেত্রে বহু মানুষ হায়রানির শিকার হন বলে অভিযোগ। নন্দকুমারের কোলসর পুয়াদ্যা, ব্যবত্তারহাট এবং তমলুক শহরে আসার জন্য বাধ্য হয়ে নন্দকুমার থেকে টোটো চেপে যাতায়াত করতে হয়েছে বেশি টাকা দিয়ে।