প্রতীকী ছবি।
প্রথা ভেঙে উপ-নির্বাচনে তৃণমূলের ইস্তাহার নিয়ে জল্পনা চলছিলই। শক্ত গেরুয়া ঘাঁটি রেলশহরের সেই ভোট ঘিরে প্রকাশিত ইস্তাহার নিয়ে এ বার প্রশ্ন তুলতে শুরু করল বিরোধীরা।
‘প্রদীপের পঞ্চপ্রতিজ্ঞা’ নামে ওই ইস্তাহার বৃহস্পতিবার প্রকাশ করেন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী। তা নিয়ে আলোচনা করতেই শুক্রবার খড়্গপুরের ২০ নম্বর ওয়ার্ড কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক হয়। তৃণমূলের হাত ধরা ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার তরফেই সাংবাদিক বৈঠক ডাকা হয়। নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক ঘন্টা পরে শুরু হয় সাংবাদিক বৈঠক। প্রার্থী প্রদীপ সরকার ছাড়াও ছিলেন তৃণমূলের শহর সভাপতি রবিশঙ্কর পাণ্ডে, কার্যকরী সভাপতি জহরলাল পাল, জেলা নেতা দেবাশিস চৌধুরী।
পরিকাঠামো উন্নয়নে সার্বিক নিকাশির পুনর্গঠন, স্বচ্ছধারায় প্রতিটি ওয়ার্ডে পরিশ্রুত জল সরবরাহ, জলাশয়ের উন্নয়ন, জনকল্যাণে স্বসহায়ক দলগুলিকে সময়মতো অর্থবন্টন, নিরাপত্তায় পথবাতির পরিকাঠামো উন্নয়ন, সিসিটিভি ক্যামেরা, স্বাস্থ্যই সম্পদে শৌচাগার নির্মাণ, সাপ্তাহিক নর্দমা পরিষ্কার ও বর্জ্য ব্যবস্থাপন প্রকল্প গড়ে তোলার কথা বলে হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, ৮ বছরের তৃণমূল সরকার ও সাড়ে ৪ বছরের তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা কেন এই কাজ করতে পারল না?
ইস্তাহারে আরও বলা হয়েছে, বাংলা আবাস যোজনায় ১০ হাজার বাসস্থানের ব্যবস্থায় রেলের সঙ্গে আলোচনা ও গোলবাজারে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন দফতরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা হবে। প্রশ্ন হল, রেল এলাকায় কাজে বারবার বাধার অভিযোগ তুলেছে পুরসভা। বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে মামলা গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। এমন অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও কীভাবে এ সব ইস্তাহারে ঠাঁই পেল? হাসপাতালের ডায়ালিসিস যন্ত্র, আইসিইউ-এর মতো ঘোষিত ও বরাদ্দকৃত প্রকল্পকে কেন ইস্তাহারে রাখা হয়েছে সেই প্রশ্নও উঠেছে।
বিজেপি প্রার্থী প্রেমচাঁদ ঝা বলেন, “এতদিন রাজ্য সরকার ও তৃণমূলের পুরসভা কেন এ সব কাজ করল না সেটাই তো প্রশ্ন। যে প্রতিশ্রুতি পূরণ নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে তা ইস্তাহারে রাখার অর্থ কী?” এ দিন প্রচারের মাঝে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও বলেন, “ওরা আট-নয় বছর সরকারে থেকে কিছু করতে পারল না। এখন ইস্তাহার প্রকাশ করে বলছে করব।” কংগ্রেস প্রার্থী চিত্তরঞ্জন মণ্ডলও বলেন, “এটা ভেক ইস্তাহার।”
সাংবাদিক বৈঠকেও ইস্তাহার প্রশ্নে সদুত্তর এড়িয়ে তৃণমূলের শহর সভাপতি রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলেন, “বিধায়ক তহবিলের টাকাতে তো পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজই করতে পারব।” তৃণমূল প্রার্থী তথা পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারের আবার বক্তব্য, “আগের বিধায়ক খড়্গপুরের বিধায়ক হয়েও খড়্গপুরের সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলেননি। তাই আমাদের সিদ্ধান্ত বিধায়ক হলে আমরা রেলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমন্বয়ের চেষ্টা করব।” তবে কি এই ইস্তাহার শুধুই আলোচনাপত্র? এ বার তৃণমূল নেতা দেবাশিস চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘আমরা যেটা ইস্তাহারে ঘোষণা করেছি, আমরা চাইছি সেটা নিয়ে বিতর্ক হোক।”