—ফাইল চিত্র।
শিয়রে পুরসভার ভোট। কিন্তু তার আগে শাসকদল তৃণমূলের ‘দুর্গ’ কাঁথিতে সংগঠন সামলাতে ‘হিমশিম’ খাচ্ছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। অন্তত তেমনটাই জানা যাচ্ছে দলীয় সূত্রে।
প্রায় বছর খানেক আগে বিজেপি’র কাঁথি শহর সভাপতি মহেশ শূর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকে বিজেপির সাংগঠনিক সঙ্কট আরও বেড়ে গিয়েছে বলে খবর। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্ব জানাচ্ছেন, বছরখানেক ধরে কাঁথি শহর সভাপতির পদ ফাঁকা রয়েছে। এই অবস্থায় পুর এলাকার ২১টি ওয়ার্ডে সাংগঠনিক কাজকর্ম পরিচালনা নিয়ে যথেষ্ট সমস্যা তৈরি হয়েছে।
চলতি বছর এপ্রিলে কাঁথি পুরসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার আগেই পুরভোটের দামামা বেজে গিয়েছে কাঁথিতে। কিন্তু সেখানে গত পুরসভা, বিধানসভা এবং লোকসভা নির্বাচনের পরপর তিনবার জেলায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিজেপি এখন অনেকটাই নড়বড়ে পরিস্থিতি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা বিজেপির এক শীর্ষ নেতা জানাচ্ছেন, সরাসরি শহর সভাপতি না থাকার জন্য প্রতি মুহূর্তের সাংগঠনিক কার্যকলাপ জেলা নেতাদেরকেই তদারকি করতে হচ্ছে। যাঁদের অধিকাংশ কাঁথি শহরের বাসিন্দা নন। এতে সমস্যা বাড়ছে দলে।
উল্লেখ্য, একটানা চার বার বিরোধী-শূন্য ভাবে কাঁথিতে পুরসভা গঠন করতে সমর্থ হয়েছে তৃণমূল। যার মূল কাণ্ডারি ‘অধিকারী পরিবার’। কিন্তু গত এক বছরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ-সহ তাদের শীর্ষ নেতারা যেভাবে বারবার কাঁথিতে এসেছেন, তাতে তাঁরা এখানের পুরভোটকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন, তা মানছে রাজনীতির কারবারীরাও।
বিজেপি সূত্রের খবর, আপাতত পুরসভার ২১ ওয়ার্ডে নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত একটি কমিটি তৈরি করেছে। ওই কমিটিতে ওয়ার্ড ভিত্তিক ১৫ জন করে সদস্য রয়েছেন। তাঁরা প্রাথমিক ভাবে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার এবং ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জনমত তৈরি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনকী, প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে তিন জন করে প্রার্থী বাছাই প্রাথমিক ভাবে হয়ে গিয়েছে বলে জেলা বিজেপি সূত্রের খবর। কিন্তু শহর সভাপতির নাম ঘোষণা করতে না পারায় বিড়ম্বনা দেখা গিয়েছে দলেরই কর্মীদের মধ্যেই।
যদিও বিজেপির জেলা সভাপতি (কাঁথি) অনুপ চক্রবর্তীর দাবি শহরের সাংগঠনিক সভাপতি আপাতত ঠিক হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের সন্ত্রাসের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য শহর সভাপতির নাম এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। তবে শহর সাংগঠনিক সভাপতির নেতৃত্বে গত দুমাস ধরে পুর ভোটের নির্বাচন সংক্রান্ত সাংগঠনিক কাজকর্ম শুরু হয়ে গিয়েছে।’’
বিজেপিকে কটাক্ষ করেছে রাজ্যের শাসক দল। এ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কনিষ্ক পণ্ডা বলেন, ‘‘যারা সাংগঠনিক সভাপতি বাছাই করতে এতদিন সময় লাগিয়ে দেয়, তারা পুরভোটে কোনও দাঁত ফোটাতেই পারবে না।’’