পায়ে-পায়ে: সোমবার কাঁথিতে মিছিলে শুভেন্দু। নিজস্ব চিত্র
একজন হেঁটেছিলেন সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনকে সমর্থন জানিয়ে। তারই পাল্টা হিসাবে হাঁটলেন আর এক জন। তবে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে। ১০ দিনের ব্যবধানে দুই মিছিলের দুই ভিন্ন রূপ দেখলেন কাঁথি শহরের মানুষ।
গত ২৭ ডিসেম্বর কাঁথি শহরে নতুন নাগরিকত্ব আইন চালুর জন্য ‘‘অভিনন্দন যাত্রা’ কর্মসূচিতে মিছিল করেন সাংসদ ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সোমবার কেন্দ্রীয় সরকারের সেই আইনের প্রতিবাদ জানিয়ে মিছিল করলেন পরিবহণ মন্ত্রী ও তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারী।
এদিন কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতি আর মিছিলের বহরে তুলনামূলকভাবে বিজেপির চেয়ে অনেকটাই এগিয়েছিল শাসক দল। যা দেখে শহরের সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডে প্রকাশ্যে সভায় পরিবহণ মন্ত্রী বলেন, ‘‘লোকসভা কিংবা বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নয়। সাধারণ মানুষের বক্তব্যই দেশের মূল বক্তব্য।’’ এদিন জাতীয় নাগরিকপঞ্জি ইস্যু তুলে বিজেপি এবং কেন্দ্রকে আক্রমণ করে শুভেন্দু বলেন, ‘‘বরাবর কেন্দ্রে যে সরকার থাকে তারা কখনও গরিবি হটানোর কথা বলে, আবার কখনও অন্ন বস্ত্র বাসস্থানের কথা বলে। কিন্তু সেই সব দাবি এখনও পূরণ হয়নি। তাই মূল দাবি থেকে দেশের মানুষকে দূরে সরিয়ে রাখতে এ সব আইন আনা হচ্ছে।’’
কেন্দ্রের পাশাপাশি বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বকেও তীব্র আক্রমণ করেন শুভেন্দু। তবে এদিনের কর্মসূচিকে কয়েকদিন আগে কাঁথি শহরে বিজেপি রাজ্য সভাপতির কর্মসূচির ‘পাল্টা’ হিসেবে দেখতে না চাইলেও দিলীপ ঘোষকে কটাক্ষ করে পরিবহণ মন্ত্রী বলেন, ‘‘নিজের এলাকাতেই তো উনি হেরে গিয়েছেন। আগে খড়্গপুর সামলানো দরকার। তারপরে কাঁথি নিয়ে ভাবা উচিত।’’
কয়েক মাস বাদেই কাঁথি পুরসভার ভোট। তার আগে এখানে বদলের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এদিন সেই প্রসঙ্গ টেনে শুভেন্দু বলেন, ‘‘আমি ভোটের আগে ফল ঘোষণা করি। যেদিনই হোক কাঁথি পুরসভার ভোট হবে। এখানে সব আসন তৃণমূলই পাবে।’’
এদিন শুভেন্দুর মিছিল এবং সভা ঘিরে সকাল থেকেই গোটা শহর জুড়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত করা হয়। তবে সভা চলাকালীন সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড এলাকা পুরোপুরি অবরুদ্ধ হয়ে যায়। ফলে দিঘাগামী পর্যটকদের গাড়ি রাস্তার দু’দিকে বেশ কিছুক্ষণ আটকে থাকে। সভা শেষ হওয়ার প্রায় আধঘণ্টা বাদে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এ দিনের কর্মসূচিতে সাংসদ ও জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারী, সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী-সহ একাধিক নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন।