প্রতীকী ছবি।
লালগড় থানার মালখানা থেকে পাচার হয়ে যাওয়া ১৮টি বন্দুকের মধ্যে একটির হদিস মিলল। ধৃতদের জেরা করে কলকাতার বাগুইআটি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে সুপ্রিয় দে নামে জমি-বাড়ির ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত এক ব্যক্তিকে। সুপ্রিয়কে জেরা করে উদ্ধার করা হয়েছে বন্দুকটি।
শনিবার ঝাড়গ্রাম জেলা গোয়ন্দা শাখার পুলিশের একটি দল সুপ্রিয়কে গ্রেফতার করে। রবিবার সুপ্রিয়কে ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হয়েছিল। তাঁকে আটদিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। এই মামলায় পুলিশি হেফাজতে থাকা বিনপুরের মুরকুনিয়া গ্রামের বৃদ্ধ হাতুড়ে সুধাংশু সেনাপতিকেও হাজিরার একদিন আগেই, রবিবার আদালতে তোলা হয়েছিল। সুধাংশুকে চোদ্দদিনের জন্য জেল হাজতে পাঠায় আদালত। জেলা পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌর বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের জেরা করে আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একটি বন্দুক উদ্ধার হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।’’ তবে পুলিশের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বেআইনি অস্ত্র কারবারিদের কাছ থেকে সুপ্রিয় অস্ত্র কিনতেন। তারাপদ- সহ চার অভিযুক্তকে জেরা করে সুপ্রিয়ের হদিস পায় পুলিশ।
পুলিশ হেফাজতে থাকার মেয়াদ শেষ হওয়ায় মূল অভিযুক্ত জামবনি থানার পুলিশ সাব ইন্সপেক্টর তারাপদ টুডু, লালগড় থানার এনভিএফ কর্মী লক্ষ্মীরাম রানা ও সুধাংশুর ছেলে দিলীপ সেনাপতিকে সোমবার ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হয়। সরকারি আইনজীবী অনিল মণ্ডল তারাপদ-সহ তিন অভিযুক্তকে তদন্তের স্বার্থে আরও হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন বলে আদালতে আবেদন করেন। তিন অভিযুক্তকে আরও পাঁচদিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। অস্ত্র উদ্ধার হওয়ায় এই মামলায় ২৫ ও ২৯ নম্বর অস্ত্র আইনের ধারা যুক্ত করার জন্য আবেদন জানায় পুলিশ। আবেদন মঞ্জুর করে আদালত। তবে কীভাবে সুপ্রিয়কে ধরা হল। মামলার গতি প্রকৃতি নিয়ে কিছুই খোলসা করেনি পুলিশ। তবে পুলিশের সূত্র জানাচ্ছে, এই অস্ত্র চুরির ঘটনায় বড় একটি চক্র হয়েছে ।
ঝাড়গ্রাম জেলার লালগড় মালখানা থেকে অস্ত্র পাচারের অভিযোগে মঙ্গলবার সাব ইন্সপেক্টর তারাপদ টুডু-সহ চারজনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ওই ১৮টি লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক বিভিন্ন ব্যক্তির। যাঁরা বন্দুক বাড়িতে না রেখে পুলিশের হেফাজতে রেখেছিলেন। লালগড় থানায় কর্মরত থাকাকালীন তারাপদ মালখানার ভারপ্রাপ্ত ছিলেন। চলতি বছরের জানুয়ারির গোড়ায় তারাপদ জামবনি থানায় বদলি হয়ে যান। ১৬ জানুয়ারি লালগড় থানার সাব ইন্সপেক্টর বিশ্বজিৎ পাঁজাকে মালখানার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন তারাপদ। কিন্তু দেখা যায়, ১৮টি আগ্নেয়াস্ত্রের হদিস নেই। পুলিশের দাবি, তারাপদও খোয়া যাওয়া অস্ত্রের কোনও হদিস দিতে পারেননি। পুলিশ সূত্রের খবর, তারাপদকে জেরা করলে তিনি স্বীকার করেন, এনভিএফ কর্মী লক্ষ্মীরাম রানার সহযোগিতায় অস্ত্র পাচার করেছেন তিনি। তাঁদের সহযোগিতা করেছেন বিনপুরের মুরকুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা সুধাংশু ও তাঁর ছেলে দিলীপ। মঙ্গলবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অভিযোগ দায়ের করেন লালগড় থানার আইসি অরিন্দম ভট্টাচার্য। মঙ্গলবারই ঝাড়গ্রাম এলাকা থেকে বছর সাতান্নের তারাপদকে গ্রেফতার করা হয়। তারাপদকে জেরার সূত্র ধরে লালগড় থেকে লক্ষ্মীরাম এবং বিনপুরের মুরকুনিয়া থেকে সুধাংশু ও দিলীপকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।