কুরবান স্মরণে মিছিল। বৃহস্পতিবার । ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক কার্যকরী সভাপতি কুরবান শা’র খুনের ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করা হল এক আনিসুর ঘনিষ্ঠকে। ধৃতের নাম শেখ খালেক আহমেদ।
দুষ্কৃতীদের গুলিতে কুরবান খুন হওয়ার পর জেলার তৃণমূল নেতা ও পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া আনিসুর রহমানের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন। খুনের তদন্তে নেমে পুলিশ আনিসুরের ভাই-সহ তিনজনকে আটক করে। যার মধ্যে ছিল ধৃতও। যদিও এদিন শেখ খালেক আহমেদকে গ্রেফতারের পর পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, খালেক স্থানীয় তৃণমূল নেতা এবং আনিসুরের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত। ফলে শুভেন্দু কুরবান খুনে আনিসুরকে দায়ী করলেও ঘটনায় অভিযুক্ত হিসাবে একজন তৃণমূল নেতা গ্রেফতার হওয়ায় অস্বস্তিতে শাসক দল। ধৃতকে এদিন তোলা হয় তমলুক আদালতে। বিচারক তার পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। যদিও এই খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসাবে বিজেপি নেতা আনিসুরকে এখনও গ্রেফতার করেনি পুলিশ। আনিসুরকে ধরতে পুলিশের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল তৈরি হয়েছে।
নবমীর রাতে পাঁশকুড়ার মাইশোরা বাজারে দলীয় কার্যালয়ে খুন হন পাঁশকুড়া-১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি কুরবান শা। দুষ্কৃতীরা খুব কাছ থেকে তাঁর মাথায় গুলি করে বলে অভিযোগ। ঘটনার রাতেই পাঁশকুড়ার শিমুলহাণ্ডা থেকে আনিসুর ঘনিষ্ঠ শেখ খালেক আহমেদকে আটক করে পাঁশকুড়া থানার পুলিশ। আটক করা হয় আনিসুরের ভাই তথা পাঁশকুড়া পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ আশিকুর রহমান ও আরেক অভিযুক্ত শেখ মোবারকের স্ত্রীকেও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত শেখ খালেকের ছেলে উসিয়ার রহমান কেশাপাট গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য। তবে ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেশাপাট পঞ্চায়েতে প্রধান নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে খালেক ও উসিয়ারের। উসিয়ার ও খালেক খাতায় কলমে তৃণমূলে থাকলেও তলে তলে তাঁরা আনিসুরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে এলাকায় কাজ করতেন। যদিও খালেকের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য উসিয়ারকে ফোন করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বিজেপি নেতা আনিসুর রহমান এখনও ফেরার। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, আনিসুর এই মুহূর্তে রাজ্যের বাইরে আছেন। তমলুকের এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘কুরবান শা খুনের ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’
অন্যদিকে কুরবান খুন হওয়ার পর নিরাপত্তার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন কুরবানের পরিবার। তাই খুনের পর দিন থেকেই কুরবানের বাড়ির সামনে দু’জন করে সিভিক ভলান্টিয়ারকে পাহারায় রাখা হয়েছে। কুরবান খুনের প্রতিবাদে এদিন মাইশোরা অঞ্চল তৃণমূলের পক্ষ থেকে একটি ধিক্কার মিছিলের আয়োজন করা হয়।