সঙ্কট শাসকদলের

রাস্তা নিয়ে ক্ষোভে দোসর জেলা কর্মাধ্যক্ষ

গোটা বিধানসভা এলাকা জুড়েই জেলা পরিষদের পাকা রাস্তাগুলির কঙ্কালসার চেহারা। পঞ্চায়েত থেকে রাজ্য সর্বত্র ক্ষমতায় তৃণমূল। প্রতিটি ভোটে রাস্তার উন্নয়নের আশ্বাস সত্ত্বেও কাজ হয়নি।

Advertisement

অমিত কর মহাপাত্র

দাঁতন শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৬ ০১:৪৪
Share:

এই রাস্তা নিয়েই ক্ষোভ বাসিন্দাদের। নিজস্ব চিত্র।

গোটা বিধানসভা এলাকা জুড়েই জেলা পরিষদের পাকা রাস্তাগুলির কঙ্কালসার চেহারা। পঞ্চায়েত থেকে রাজ্য সর্বত্র ক্ষমতায় তৃণমূল। প্রতিটি ভোটে রাস্তার উন্নয়নের আশ্বাস সত্ত্বেও কাজ হয়নি। এবার বিধানসভা ভোটে দাঁতন কেন্দ্রে এই বেহাল রাস্তাকেই হাতিয়ার করেছে বাম-কংগ্রেস জোট, বিজেপি। আর তাতেই পদে পদে নাকাল হতে হচ্ছে তৃণমূলকে।

Advertisement

গতবার দাঁতন কেন্দ্রের তৃণমূলের পরাজিত প্রার্থী মুকুল রায়ের অনুগত শৈবাল গিরি আবার জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ। দলীয় সূত্রের খবর, এবারও ফের টিকিট পাবেন আশা করে কয়েকটি রাস্তার কাজে গতি আনার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু টিকিট না পাওয়ার পর থেকেই সেই কাজ কোথাও বন্ধ কোথাও বা চলছে শ্লথ গতিতে। এলাকার দীর্ঘদিনের দক্ষ সংগঠক ও নেতা শৈবালবাবুর ক্ষোভ বুঝেই তাঁকে এই বিধানসভা নির্বাচন কমিটির সভাপতিও করা হয়। কিন্তু তাতেও মন নরম হয়নি তাঁর। প্রচারের কাজে নিষ্ক্রিয় থাকা ও গত এক সপ্তাহ ধরে প্রচারে না আসার অভিযোগ উঠছে তিনি ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। নেতাদের দাবি, বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্ব এমনকী দলনেত্রীর কানেও তোলা হয়েছে। গতবার পরিবর্তনের ঝড়েও এই কেন্দ্রে হেরেছিল তৃণমূল।

এবার প্রার্থী হয়েছেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আস্থাভাজন বিক্রম প্রধান। ৩১ মার্চ তাঁর সমর্থনে নিজেই সভা করতে আসছেন মমতা। এখন প্রার্থীসহ দলের নেতা কর্মীরা অপেক্ষায় রয়েছেন, দাঁতনে জয় নিশ্চিত করতে বিক্ষুব্ধদের কী বার্তা দেন দলনেত্রী। দলের জেলা নেতা শৈবাল গিরির অবশ্য দাবি, জেলার সাংগঠনিক কাজের পাশাপাশি জেলা পরিষদের কাজও দেখতে হচ্ছে তাঁকেই দলের নির্দেশে। এই সব কাজের বাইরে তাঁর পক্ষে সময় বার করা কঠিন হয়ে পড়েছে। রাস্তার কাজ প্রসঙ্গে শৈবালবাবু অবশ্য বলছেন, “সময়ে রাস্তার কাজের টাকা দেয়নি কেন্দ্র সরকার। ঠিকাদাররা রাস্তার কাজে দেরি করছে। আর কী করার আছে।’’

Advertisement

বোড়াই-সগড়া, মোহনপুর–আমরদা, মোহনপুর–পুরুণিয়া, হরিপুর–আমরদা, সাউটিয়া–দোবাড়িয়া ইত্যাদি প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনার রাস্তাগুলি যে চলাচলের অযোগ্য তা মানছেন সকলেই। সিপিআই প্রার্থী শিশির কুমার পাত্র, বিজেপি প্রার্থী শক্তিপদ নায়ক বলেন, “তৃণমূল উন্নয়নের দাবি করছে। কিন্তু তার বাস্তব চেহারাটা মানুষ দেখতে পাচ্ছেন রাস্তায়। রাস্তার কারণে মানুষের দুর্ভোগও ভোটে বড় প্রভাব ফেলছে।” দাঁতন কেন্দ্রের তৃণমূলের এক গুরুত্বপূর্ণ নেতাও বলেন, “ এত উন্নয়নের মাঝখানে এই অনুন্নয়ন মানুষ মানবেন কেন। ভোটে এর বড় প্রভাব তো পড়ছেই।” শৈবালবাবুর বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতের অভিযোগ সরাসরি স্বীকার না করলেও দলের দাঁতন ২ ব্লক সভাপতি দুর্গেশ কুমার নন্দ বলেন, “ দলের কেউ কেউ এসব কথা বলবে। কারোর জন্য অপেক্ষা করে লাভ নেই। প্রার্থীকে জেতাতে কাজ করে যেতে হবে।” অন্তত দলনেত্রীর জন্য ৩১ মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে তৃণমূলের একাংশকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement