ভরাডুবিতেও লিড, দলে ‘গুড বয়’ নন্দ

ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের আওতায় থাকা ৭ টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে দুটি বিধানসভায় হেরেছে তৃণমূল। এর একটি ডেবরা আর একটি পাঁশকুড়া পশ্চিম।

Advertisement

দিগন্ত মান্না

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৯ ০০:০১
Share:

নন্দকুমার মিশ্র (মাঝ খানে)

ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের আওতায় থাকা ৭ টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে দুটি বিধানসভায় হেরেছে তৃণমূল। এর একটি ডেবরা আর একটি পাঁশকুড়া পশ্চিম। এ বারের ফলে পাঁশকুড়া পশ্চিম বিধানসভায় ২ হাজার ৮৪৫ ভোটে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। যদিও ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে এই বিধানসভা থেকে ১৪ হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়ে ছিল তৃণমূল।

Advertisement

পাঁশকুড়া ব্লকের ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও পাঁশকুড়া পুরসভা নিয়ে গঠিত পাঁশকুড়া পশ্চিম বিধানসভা। এই ১৪টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৯ টিতেই ভরাডুবি হয়েছে তৃণমূলের। মাত্র ৫টি পঞ্চায়েতে নিজেদের রাশ ধরে রাখতে পেরেছে শাসক দল। তবে পাঁশকুড়া পুরসভা থেকে প্রায় ৫ হাজার ভোটের লিড দিয়েছে তৃণমূল প্রার্থীকে। যা ভরাডুবির বাজারে বাড়তি অক্সিজেন জোগাচ্ছে শাসক দলকে। পুর পরিষেবা নিয়ে পুরবাসীর অভিযোগের শেষ নেই। তারই মধ্যে পুর এলাকার এই ফলকে ‘উন্নয়নের’ মাপকাঠি বলেই মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও বিরোধীদের দাবি পুর এলাকায় তৃণমূলের ভাল ফলের পিছনে রয়েছে ‘ছাপ্পা’ ভোট।

২০১৭ সালের পুর নির্বাচনে পাঁশকুড়া পুরসভার ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৭ টিতেই জয়ী হয় তৃণমূল। মাত্র একটি ওয়ার্ডে জেতে বিজেপি। সে বার শাসক দলের বিরুদ্ধে ব্যাপক ‘ছাপ্পা’ ভোটের অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। পুরবোর্ড গঠন নিয়েও তৎকালীন তৃণমূল নেতা আনিসুর রহমানের সঙ্গে বিস্তর দড়ি টানাটানি হয়। আনিসুরকে দল থেকে বহিষ্কার করে তৃণমূল। পুরসভার চেয়ারম্যান হন নন্দকুমার মিশ্র। বর্তমান পুরবোর্ডের পরিষেবা নিয়ে পুরবাসীর যে ক্ষোভ রয়েছে তার প্রতিফলন পড়েছিল পাঁশকুড়া শহরে তৃণমূল প্রার্থী দেবের ভোট প্রচারের সভাগুলিতে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মাঠে নামেন পাঁশকুড়া শহর তৃনমূল নেতৃত্ব। কর্মিসভা ও জনসভার পাশাপাশি পুরসভার চেয়ারম্যান নন্দকুমার মিশ্রের নেতৃত্বে প্রতি ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচার শুরু হয়। ফলও মিলেছে হাতে হাতে। এ বার ভোটের ফলে পুরসভার ১৮ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩ টিতেই এগিয়ে তৃণমূল। ৫ টিতে জিতেছে বিজেপি। পুর এলাকা থেকেই শাসক দল লিড পেয়েছে ৪ হাজার ৮০০ ভোটের।

Advertisement

রাজ্য জুড়ে বিজেপির যে ভাবে ভোট বেড়েছে, তাতে গোটা পাঁশকুড়া পশ্চিম বিধানসভায় এই ফল শাসককে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে। নির্বাচনে ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন নন্দকুমার মিশ্র। দলকে লিডের মুখ দেখিয়ে দলের নজরে আপাতত ‘গুড বয়’ নন্দবাবু। তিনি বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের জোরেই পুর এলাকায় এই ফল হয়েছে। তবে ব্লকস্তরে ফল কেন খারাপ হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে আমরা পর্যালোচনায় বসব। গোটা বিধানসভা এলাকায় যেটুকু ভোট কম পেয়েছি তা আগামী দু’বছরে পূরণ করার চেষ্টা হবে।’’

পুর এলাকায় শাসকের এই জয়কে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। পাঁশকুড়া পুরসভার বিরোধী নেতা সিন্টু সেনাপতি বলেন, ‘‘পুরসভার ৮ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ড সহ অসংখ্য ওয়ার্ডে ছাপ্পা ভোট করিয়েছে তৃণমূল। তাই পুর এলাকায় লিড দিতে পেরেছে। স্বচ্ছভাবে ভোট হলে পাঁশকুড়া পুরসভায় হার নিশ্চিত ছিল তৃণমূলের।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement