নিম্নচাপের ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টির দাপটে পূর্ণিমার ভরা কটালের জোয়ারে রূপনারায়ণ নদের বাঁধ উপচে জলমগ্ন তমলুক শহরের দুটি ওয়ার্ডের শতাধিক বাড়ি। নিজস্ব চিত্র।
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের চাপের জেরে রবিবার থেকে ঝোড়ো হাওয়া সঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছিল আবহাওয়া দফতর। রবিবার সকাল থেকেই তার জেরে রূপনারায়ণ, হুগলি, হলদি নদী ও সমুদ্রে ভরা কটালে জোয়ারের জল বাঁধ উপচে জলমগ্ন হল তমলুক, শহিদ মাতঙ্গিনী, কোলাঘাট, মহিষাদল, নন্দকুমার, চণ্ডীপুর, খেজুরি, দেশপ্রাণ ব্লকের নদী ও সমুদ্র তীরবর্তী বেশ কিছু এলাকা। খেজুরি সহ কয়েক জায়গায় বাসিন্দাদের অন্যত্র সরানো হয়েছে। ঝোড়ো হাওয়ায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পুকুরের জলে পড়ায় চণ্ডীপুর ব্লকের শুকলালচক গ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশ ও বিদ্যুৎ দফতর সূত্রের খবর, মৃতের নাম রীতা দোলই দাস (২৭)। সকাল থেকেই টানা বৃষ্টিতে এদিন জেলার স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত হয়েছে। সেচ দফতর ও স্থানীয় সূত্রে খবর, একে পূর্ণিমার ভরা কটাল তার উপর এদিন ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টির দাপটে রূপনারায়ণ, হুগলি, হলদি নদীতে জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ উপচে বসতি এলাকা, বাজার জলমগ্ন হয়ে পড়ে। রূপনারায়ণ নদের জোয়ারের জল বাঁধ উপচে তমলুক শহরের উত্তরচড়া ও দক্ষিণচড়া শঙ্করআড়া, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের ধলহরা, মথুরী, বিশ্বাস, নুন্নান, সোয়াদিঘি এবং কোলাঘাট বাজারের একাংশ জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বসতবাড়ি ও নদী তীরবর্তী একাধিক ইটভাটা জলমগ্ন হয়েছে। রূপনারায়ণের জলের ধাক্কায় মহিষাদল ব্লকের দনিপুর এলাকায় বাড়অমৃতবেড়িয়া গ্রামের বেলতলায় নদীবাঁধে ধস নেমে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেচ দফতরের কর্মীরা জরুরিকালীন ভিত্তিতে বাঁধ রক্ষার জন্য কাজ করছেন। এলাকায় যান মহিষাদলের বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী, বিডিও যোগেশচন্দ্র মণ্ডল সহ সেচ দফতরের আধিকারিকরা।
হলদি নদীতে জলোচ্ছ্বাসের জেরে নন্দকুমার ব্লকের উত্তর নরঘাট মিনি বাজার, গিরিরচক, সাতেরচক ও কালীরচক, মহিষাদল ব্লকের তেরপেখ্যা ও হরিখালি বাজার , চণ্ডীপুর ব্লকের রাধাগঞ্জ বাজার, নন্দীগ্রাম- ২ ব্লকের বয়াল নয়াচক এলাকা জলমগ্ন হয়। রসুলপুর নদীর জোয়ারের জল উপচে খেজুরি- ১ ব্লকের পাটনা, আলাইচক, দক্ষিণ কন্ঠিবাড়ি ও খেজুরি- ২ ব্লকের পাচুড়িয়া, নোনাপাতা গ্রামের একাংশ সমুদ্রের জল উপচে জলমগ্ন হয়েছে।
জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় হালদার বলেন, ‘‘নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া এবং ভরা কটালের জল ঢুকে জেলার তমলুক, হলদিয়া, কাঁথি মহকুমার বিভিন্ন নদী ও সমুদ্রতীরবর্তী কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়েছে। খেজুরি এলাকায় বেশ কিছু বাসিন্দাকে অন্যত্র সরানো হয়েছে। তবে বড় ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই। সব ব্লক প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।’’