হাতি ধরতে নয়া কৌশল বন দফতরের। — ফাইল চিত্র।
জঙ্গলমহলের হাতি তাড়াতে উত্তরবঙ্গের জলদাপাড়া থেকে ঝাড়গ্রামে নিয়ে আসা হল দু’টি কুনকি হাতি। শম্ভু এবং মীনাক্ষী নামে দু’টি কুনকি হাতিকে দিয়েই বন দফতর এ বার থেকে দলছুট ও আক্রমণাত্মক হাতিদের ধরার কৌশল নিয়েছে। তার পর সেই হাতিগুলিকে পাঠানো হবে উত্তরবঙ্গে। মঙ্গলবার দুপুরে দু’টি লরিতে চাপিয়ে কুনকি দুই হাতিকে নিয়ে আসা হয় ঝাড়গ্রামের জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্কে। পিলখানায় হাতি দু’টিকে রাখা হয়েছে। দীর্ঘ পথ অতিক্রম করার কারণে ক্লান্ত হাতিগুলি। তাদের শারীরিক পরীক্ষা করেন পশু চিকিৎসক।
ঝাড়গ্রাম জেলার বিভিন্ন রেঞ্জের অধীনস্থ গ্রামগুলিতে সারা বছর ধরে লেগেই থাকে দলমার বা দলছুট হাতিদের উপদ্রব। জঙ্গল লাগোয়া গ্রাম ছাড়াও শহরেও ঢুকে পড়ে হাতি। কয়েক মাস আগেও ঝাড়গ্রাম শহরে হাতির হানায় ঘটেছে মৃত্যুর ঘটনা। প্রাণহানির পাশাপাশি ঘরবাড়ি ভাঙচুর, ফসলের ক্ষয়ক্ষতিও হয়। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সব হাতিকে ধরার উদ্দেশ্যে ঝাড়গ্রামে নিয়ে আসা হয়েছে কুনকি হাতি দু’টিকে।
ঝাড়গ্রামে এল কুনকি হাতি। — নিজস্ব চিত্র।
তবে ওই এলাকাতেই ঘোরাফেরা করে রামলাল নামে দলছুট একটি হাতি। রামলালকে শান্ত স্বভাবের জন্য ছাড় দিচ্ছে বন দফতর। বন আধিকারিকদের মতে, রামলালের মেজাজ যথেষ্ট ভাল। তবে সাধারণ মানুষের উৎপাতে বিরক্ত হয়ে এক বার আক্রমণ চালিয়েছিল রামলাল। মৃত্যুও হয় এক জনের। কিন্তু রামলাল ছাড়া আরও বেশ কয়েকটি হাতি রয়েছে যারা আক্রমণাত্মক স্বভাবের। সেই সব হাতিগুলিকে কুনকি হাতি দিয়ে ধরার চেষ্টা করবে বন দফতর। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রাম এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চারটি ডিভিশনের বিভিন্ন রেঞ্জের জঙ্গলে একাকী তথা ‘লোনার’ আটটি হাতিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। বর্তমানে ঝাড়গ্রাম বন বিভাগের গিধনি রেঞ্জের চাঁদুয়ার জঙ্গলে ১২টি, মানিকপাড়া রেঞ্জের কুসুমঘাঁটি বিটের গোবিন্দপুর এলাকায় ৪টি, লোধাশুলি রেঞ্জের চন্দ্রী এলাকায় ১টি হাতি রয়েছে। এ ছাড়াও ঝাড়গ্রাম জেলার খড়্গপুর বিভাগের অন্তর্গত নয়াগ্রাম ব্লকের চাঁদাবিলা রেঞ্জে ৪০-৪৫টি এবং মেদিনীপুর বন বিভাগের লালগড় রেঞ্জের ঋষিগেড়িয়ায় ২-৩ টি হাতি রয়েছে বলে বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।