বৈঠকে শিক্ষমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
ঘূর্ণিঝড়ে তুলনায় কম ক্ষতিই হয়েছে ঝাড়গ্রামে। ঝাড়গ্রামকে তাই প্রায় আমপানের দুর্যোগমুক্ত ও একইসঙ্গে ‘করোনা মুক্ত’ জেলা বলে শংসাপত্র দিয়ে গেলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। একই সঙ্গে আমপান-পরবর্তী পরিস্থিতিতে শাসকদলের জনপ্রতিনিধিদের প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করার নিদান দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
শনিবার দুপুরে আমপানের পর্যালোচনা বৈঠকে জেলায় আসেন পার্থ। বৈঠকের পরে ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি ট্যুরিস্ট কমপ্লেক্সে দলের জেলা ও ব্লক স্তরের নেতা-নেত্রীদের নিয়ে দলীয় বৈঠকও করেন তৃণমূলের মহাসচিব তথা দলের তরফে জেলা পর্যবেক্ষক। বিকেলে একান্তে কথা বলেন জনসাধারণের কমিটির প্রাক্তন নেতা জেলমুক্ত ছত্রধর মাহাতো ও তাঁর স্ত্রী নিয়তির সঙ্গেও।
সাংবাদিকদের সামনেই এ দিন পার্থ বলেন, ‘‘ঝাড়গ্রাম জেলায় আমপানের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অন্য জেলার তুলনায় যথেষ্টই কম। তবে জেলায় ৬১ শতাংশ কৃষিজমির ফসল নষ্ট হয়েছে। কিছু মাটির বাড়ি ভেঙেছে। স্কুলবাড়ি ও স্কুলের পরিকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে।’’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সব সময় ঝাড়গ্রামবাসীর পাশে জানিয়ে সমন্বয় রেখে কাজের নিদান দিয়ে তাঁর বার্তা, ‘‘এখানে কোনও রাজনৈতিক যুদ্ধ নয়। করোনা ও আমপানের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ।’’
আমপান পর্যালোচনা বৈঠকে ছিলেন জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, সভাধিপতি, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, জেলা পরিষদের সদস্য, জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারপার্সন বিরবাহা সরেন-সহ বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকেরা। পার্থকে জানানো হয়, জেলার ৮ টির মধ্যে ৬টি ব্লকের ২৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত শহরের কিছু ওয়ার্ডও। দুর্গত সাড়ে ৮ হাজারেরও বেশি। ১৬টি পাকা বাড়ি ও ৭৩৩টি মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বোরো ধান, আনাজ, তৈলবীজ মিলিয়ে প্রায় ২৬ হেক্টরে ফসল নষ্ট হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শিক্ষামন্ত্রীকে আরও জানান, জেলায় একজনও করোনা আক্রান্ত নেই।
দলীয় বৈঠকে বিরবাহার স্বামী তৃণমূলের জেলা এসসি-এসটি সেলের সভাপতি রবিন টুডুকে বেলপাহাড়ি ব্লকের সাংগঠনিক কাজকর্ম বেশি করে দেখতে বলেন পার্থ। গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের নতুন কার্যকরী সভাপতি হিসেবে হেমন্ত ঘোষের নাম ঘোষণাও করেন। সরকারি প্রতিনিধি হিসেবে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারপার্সন বিরবাহা সরেনকে জেলা পরিষদের সব বৈঠকেও থাকতে বলেছেন পার্থ। অসুস্থতার জন্য বৈঠকে আসতে পারেননি শহর তৃণমূল সভাপতি প্রশান্ত রায়। ফোন করে তাঁর খোঁজ নেন পার্থ।