প্রতীকী ছবি
আমপানের তাণ্ডবে গাছ পড়ে ভেঙে গিয়েছে টালির বসতবাড়ি। মাথা গোঁজার জন্য ত্রিপল চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু প্রায় তিন সপ্তাহ কেটে গেলেও ত্রিপল মেলেনি নীলিমা খাটুয়া ও শম্ভুনাথ পাত্রদের। তমলুক পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির লোকজনদের অনেকেই আবেদন করা সত্ত্বেও সরকারি বরাদ্দ ত্রিপল পাননি বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের বদলে অন্যদের ত্রিপল বিলির অভিযোগও উঠেছে।
পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাপাসবেড়িয়ার বাসিন্দা নীলিমা খাটুয়ার অভিযোগ, ‘‘টালির বাড়ি। আমপানের দিন ঝড়ের সময় বাড়িতে থাকতে ভরসা পাইনি। পরিবারের সবাই এক প্রতিবেশীর বাড়িতে চলে যাই। পরদিন সকালে এসে দেখি গাছ পড়ে বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। ত্রিপলের জন্য পুরসভার অফিসে গিয়েছিলাম। কিন্তু এখনও ত্রিপল পেলাম না।’’ ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সমর অধিকারী বলেন, ‘‘আমপানের বাড়ির টালির চাল ভেঙে গিয়েছে। ছাউনি দেওয়ার জন্য পুরসভার অফিসে গিয়ে ত্রিপলের আবেদন জানিয়েছিলাম। কিন্তু আজও পাইনি।’’
খোদ জেলা সদরের পুর এলাকায় আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রিপল দেওয়া নিয়ে টালবাহনার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির অভিযোগ, আমপানে দক্ষিণচড়া শঙ্করআড়া, উত্তরচড়া শঙ্করআড়া, শালগেছিয়া ও আবাসবাড়ি, নারায়ণপুর এলাকা সহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় অনেক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই সব ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের তালিকা তৈরি না করে পুরসভা থেকে কয়েকশো ত্রিপল বিলি করা হয়। ফলে বহু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার বঞ্চিত হয়েছে। তমলুক নগর মণ্ডল সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ বেরার অভিযোগ, ‘‘ঝড়ে বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও ত্রিপল না পাওয়ায় পুরসভায় বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। মহকুমাশাসকের কাছে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপের দাবি জানানো হয়েছিল।’’ তিনি জানান, ত্রিপল পেতে আবেদন জমা নিয়ে তদন্ত করে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে ত্রিপল বিলির আশ্বাস দিয়েছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এখনও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে ত্রিপল বিলি হল না।
পুর প্রশাসক রবীন্দ্রনাথ সেন বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির জন্য পুরসভা থেকে ৮০০ টি ত্রিপল বিলি হয়েছে। ত্রিপল চেয়ে আরও প্রায় ৪০০ আবেদন জমা পড়েছে। এনিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির জন্য সরকারি অর্থ পাওয়ার জন্য আবেদনেরও তদন্ত করা হচ্ছে। ফলে কিছুটা দেরি হচ্ছে। টালবাহনার অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’
এ দিকে আমপানে কোন কোন ওয়ার্ডে কত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য বিবেচিত হয়েছেন তার সম্পূর্ণ তালিকা চেয়ে শহর তৃণমূল সভাপতি বিশ্বনাথ মহাপাত্র পুর প্রশাসককে চিঠি দিয়েছেন। যা নিয়ে শাসকদলের অন্দরে শোরগোল উঠেছে। কারণ পুর প্রশাসক পদে থাকা রবীন্দ্রনাথ সেন পুরপ্রধান ছিলেন। যদিও এই বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ কোনও মন্তব্য করতে চাননি।