Injection

Thalassemia: ‘ভুল’ ইঞ্জেকশন শিশুকে!

ইঞ্জেকশন দেওয়ার  কিছু সময় পর দিব্যাংশু বমি করতে শুরু করে। তার গোটা শরীরে জ্বালা শুরু হয় বলে পরিবারের দাবি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২২ ০৭:১৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুকে অন্য রোগীর ইঞ্জেকশন দেওয়ার অভিযোগ উঠল পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। ইঞ্জেকশন দেওয়ার পর শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ। ভুল চিকিৎসা হয়েছে বলে হাসপাতাল সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করলেন শিশুর বাবা। অভিযোগ অস্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

মাইশোরা গ্রাম পঞ্চায়েতের জগন্নাথপুর গ্রামের বাসিন্দা দিব্যেন্দু সামন্তর দশ বছরের ছেলে দিব্যাংশু জন্ম থেকেই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। একমাস অন্তর তাকে এক ইউনিট করে রক্ত দিতে হয়। তমলুক জেলা হাসপাতালে দিব্যাংশুর রেজিস্ট্রেশন রয়েছে। সেখান থেকেই সে রক্ত নিত। জেলা হাসপাতালের নির্দেশ মতো কোভিডের আগে থেকে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ছেলেকে নিয়ে এসে রক্ত দিতেন দিব্যাংশুর বাবা-মা। গত মঙ্গলবার, ২২ মার্চ রক্ত দেওয়ার জন্য ছেলেকে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান দিব্যেন্দু।হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ গৌতম মণ্ডলের পরামর্শে দিব্যাংশুকে শিশু ওয়ার্ডের ১২৯ নম্বর বেডে ভর্তি করা হয়। ওইদিন বিকেলে দিব্যাংশুকে এক ইউনিট রক্ত দেওয়া হয়।দিব্যাংশুর পরিবারের দাবি, এক ইউনিট রক্ত দেওয়ার পর রোগীর হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা না করেই চিকিৎসক জানান, পরের দিন তাকে আরও এক ইউনিট রক্ত দিতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওইদিন ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে থেকে যান মা মৌসুমী। পরিবারের দাবি ওইদিন ওই ওয়ার্ডের অধিকাংশ রোগীর শয্যা বদলে দেওয়া হয়।

অভিযোগ, সেই সময় একজন ওয়ার্ডবয় দিব্যাংশুর বেডে নেবুলাইজার মেশিন ও ইনহেলারের পাউচ দিয়ে যায় সেটি তার নাকে দিয়ে চালানোর জন্য। দিব্যাংশুর মা তাতে আপত্তি জানান। তাঁদের দাবি, কর্তব্যরত এক নার্স তাঁদের জানান ভুল করে অন্য রোগীর নেবুলাইজার ও ইনহেলার দিব্যাংশুকে দেওয়া হয়েছে। ওইদিন বিকেল ৩টে নাগাদ একজন নার্স দিব্যাংশুকে পরপর দুটি ইঞ্জেকশন দেন বলে অভিযোগ মৌসুমীর। তিনি জানান, ইঞ্জেকশনগুলি আদৌ দিব্যাংশুর জন্য বরাদ্দ কিনা জানতে চাওয়া হলেও ওই নার্স উত্তর দেননি। ইঞ্জেকশন দেওয়ার কিছু সময় পর দিব্যাংশু বমি করতে শুরু করে। তার গোটা শরীরে জ্বালা শুরু হয় বলে পরিবারের দাবি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো সত্ত্বেও তাঁরা কোনও পদক্ষেপ করেননি বলে অভিযোগ পরিবারের।

Advertisement

বুধবার বিকেল ৫টা নাগাদ দিব্যাংশুকে আরও এক ইউনিট রক্ত দেওয়া হয়। কিন্তু তার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ওই রাতেই নিজস্ব বন্ডে ছেলেকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসেন মৌসুমী। বৃহস্পতিবার হাসপাতাল সুপারের কাছে পুরো বিষয়টি জানিয়ে লিখিত অভিযোগ জমা দেন দিব্যাংশুর বাবা।তিনি বলেন, ‘‘প্রথম থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে আসছে। কোনও শারীরিক সমস্যা না থাকা সত্ত্বেও আমার ছেলেকে অন্যের নেবুলাইজার দেওয়া হয়। চিকিৎসকের লিখিত প্রেসক্রিপশন ছাড়াই দুটো ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে। আমার ছেলের কোনও শারীরিক সমস্যা ছিল না। বেড বদলানোর জন্য অন্য রোগীর ইঞ্জেকশন ভুল করে ওকে দেওয়া হয়েছে। ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়লেও কর্তব্যরত নার্স কোনও নজর দেননি। চিকিৎসকের দেখাও মেলেনি। বাধ্য হয়ে আমার স্ত্রী ছেলেকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে আসেন।আমাদের ব্যক্তিগত চিকিৎসকের কাছে ওর চিকিৎসা চলছে। আমি দেখা করতে চাইলেও হাসপাতাল সুপার আমাকে সময় দেননি। তাই লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।’’

পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার সঞ্জয় কুমার দাস বলেন, ‘‘রক্ত দেওয়ার সময় যে কোনও ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আটকাতে অনেক সময় ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়।ওই রোগীকে কোনও ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়নি।শুধুমাত্র প্রেসক্রিপশন করা হয়েছিল।হাসপাতালের দু'জন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতোই শিশুটিকে ভর্তি করা হয়েছিল। দু'ইউনিট রক্ত দেওয়ার জন্যই ভর্তি করতে হয়েছিল। রোগী সুস্থ অবস্থাতেই বাড়ি ফিরে গিয়েছে। তবে ওঁরা চিকিৎসা সম্পূর্ণ না করেই চলে যান। তবু যে অভিযোগ ওঁরা করেছেন, তা তদন্ত করে দেখা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement