অভিযোগপত্র।
শাসক দলের শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ উঠল শিল্প শহরে।
হলদিয়া রিফাইনারির ঠিকা শ্রমিকেরা তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র নেতা সত্যশঙ্কর সাহুর বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ এনে শ্রম দফতর এবং হলদিয়া মহকুমা শাসকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন।
অভিযোগ, করোনার জন্য এপ্রিল মাসে ঠিকা শ্রমিকদের এক দিনের হাজিরা নেওয়া হয়েছে। তার উপর আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের নামে শ্রমিকদের এক দিনের হাজিরার টাকা চাঁদা হিসেবে দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। তার জন্য কোনও রসিদ দেওয়া হচ্ছে না বলেও শ্রমিকদের দাবি। প্রতিবাদে সরব হয়েছেন রিফাইনারীর সমস্ত শ্রমিক। সত্যশঙ্কর সাহু নামে ওই তৃণমূল শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে তাঁরা সরকারি মহলে চিঠি দিয়েছেন।
হলদিয়ার ডেপুটি লেবার কমিশনার মিহিরলাল সরকার বলেন, একটি আবেদনপত্র পেয়েছি। তবে যে কারখানার শ্রমিকরা এই আবেদন করেছেন সেই কারখানা শ্রম দফতরের আওতাধীন নয়। কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রম মন্ত্রকের আওতাধীন।’’
শ্রমিকদের একাংশের অভিযোগ, কোনও শ্রমিক টাকা না দিতে চাইলে তার গেট পাস কেড়ে নিয়ে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সত্যশঙ্কর অবসর নেওয়ার পরেও মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর আনুকূল্যে এখনও হলদিয়া রিফাইনারিতে নেতা হিসেবে রয়েছেন। বিভিন্ন ভাবে শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদার নাম করে টাকা তুলছেন তিনি।
হলদিয়ার এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘অবসরের পরেও সত্যশঙ্করকে একই দায়িত্বে রাখা হয়েছে কারণ তিনি তৃণমূলের নাম করে শ্রমিক শোষণের পাশাপাশি ভাল তোলাও তুলতে পারেন।’’
অভিযুক্ত সত্যশঙ্করের অবশ্য দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে করোনা ও আমপানের জন্য শ্রমিকদের থেকে চার লাখ টাকা তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে একথা ঠিক যে ওই শ্রমিকদের টাকা নিয়ে তাঁদের কোনওরকম রসিদ দেওয়া হচ্ছে না। তবে তোলাবাজির অভিযোগ ঠিক নয়। সংগঠনের সদস্যদের মতামত নিয়েই টাকা তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শ্রমিকদের অনুদান ঠিকাদার মারফত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে। নগদে কোনও টাকা নেওয়া হয়নি।’’
যথরীতি এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধী। গেরুয়া শিবিরের শ্রমিক সংগঠন বিএম এসের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কার্যকরী সভাপতি প্রদীপ কুমার বিজলী বলেন, ‘‘যতগুলি শিল্প সংস্থা রয়েছে হলদিয়ায় প্রত্যেকটির গেটে তৃণমূলের নেতারা তোলাবাজি করে চলেছেন। শ্রমিকরা কাজ হারানোর ভয়ে মুখ খুলতে পারছেন না। কিন্তু তাঁরা ক্ষোভে ফুঁসছেন।’’
আইএনটিটিইউসির জেলার কার্যকরী সভাপতি শিবনাথ সরকার বলেন, ‘‘টাকা নিলে রসিদ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকে, এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে খতিয়ে দেখে মন্তব্য করব।’’