ফাইল চিত্র।
আদিবাসী নন, অথচ ‘সিডিউল ট্রাইব’ জাতিগত শংসাপত্র পেয়ে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে সুযোগ সুবিধা পেয়ে যাচ্ছেন কেউ কেউ। এর ফলে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত আদিবাসীরা। বিনপুরের বিধায়ক দেবনাথ হাঁসদার বাড়িতে গিয়ে তাঁর কাছে এমনই লিখিত অভিযোগপত্র তুলে দিলেন একটি আদিবাসী সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী কল্যাণ সমিতি নামে ওই সংগঠনের ঝাড়গ্রাম জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন মুর্মু ও জেলা সভাপতি বৈদ্যনাথ হাঁসদার নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল শনিবার জামবনির শাবলমারা গ্রামে বিধায়কের বাড়িতে যান। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি তালিকা এবং সরকারি নিয়োগ সংক্রান্ত তালিকার প্রতিলিপিও দেবনাথের কাছে জমা দেওয়া হয়। আদিবাসী সংগঠনটির দাবি, গত কয়েক বছরে জঙ্গলমহল-সহ সারা রাজ্যে ‘কর্মকার’, ‘রায়’, ‘সাউ’, ‘হাজারি’, ‘লোহার’, ‘বাগ’ পদবির অনেকে আদিবাসী প্রার্থী হিসেবে চাকরি পেয়েছেন। এই সব পদবির কেউ কেউ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রেও এসটি সার্টিফিকেট দাখিল করে আদিবাসী সংরক্ষিত মেধা-তালিকায় অগ্রাধিকারও পেয়েছেন। অথচ বাস্তবক্ষেত্রে ওই সব পদবিধারীরা কখনই এসটি তালিকাভুক্ত নন। সংগঠনের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন বলেন, ‘‘কয়েক বছর ধরে বিষয়টি লক্ষ্য করার পরে জেনেছি, আদপেই আদিবাসী নন, এমন লোকজন জাতিগত শংসাপত্র পেয়ে গিয়েছেন। তার ফলে সংরক্ষিত পদে কেউ কেউ চাকরি পেয়ে সংরক্ষণের সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন। কিভাবে এটা সম্ভব হল, তা খতিয়ে দেখার জন্য বিধায়কের কাছে আবেদনপত্র জমা দিয়েছি।’’
গত কয়েক বছরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র দাখিল করে চাকরি পাওয়া ও বিভিন্ন সরকারি ও সরকার পোষিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কয়েকজনের বিরুদ্ধে তদন্তও চলছে। তবে আদিবাসী সংগঠনটির ধারণা, বিভিন্ন ভুয়ো তথ্য দাখিল করেই অ-আদিবাসীদের একাংশ সরকারের কাছে থেকে জাতিগত শংসাপত্র পেয়ে যাচ্ছেন। জঙ্গলমহলে আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্তদের মধ্যে সাঁওতাল, মুন্ডা, ভূমিজ, কোড়া, শবর, মুদির মতো কয়েকটি জনগোষ্ঠী রয়েছে। এই সব জনগোষ্ঠীর বাইরে থেকেও আদিবাসী হিসেবে জাতিগত শংসাপত্র পাওয়ার ব্যাপারে উপযুক্ত তদন্তের দাবি জানিয়েছে আদিবাসী সংগঠনটি। অভিযোগ পেয়ে দেবনাথ বলেন, ‘‘অ-আদিবাসীরা জাতিগত শংসাপত্র দাখিল করে চাকরি পেয়ে যাচ্ছেন বলে আদিবাসী সংগঠনটি অভিযোগ করেছে। বিষয়টি বিধানসভায় তুলব।’’