অখিল গিরি এবং শুভেন্দু অধিকারী।
বিরোধীর দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সভার কার্যত পাল্টা কর্মসূচি হিসাবে আয়োজন করা হয়েছিল তৃণমূলের সভার। সোমবার ভগবানপুর-২ ব্লকের পাঁউশি সেচ দফতরের মাঠের ওই সভা থেকে বিরোধী দলনেতার কাঁথির বাড়ি ‘শান্তি কুঞ্জ’ তৈরির নিয়েও কটাক্ষ করতে শোনা গেল রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরিকে। তিনি দাবি করলেন, পুকুর ভরাট করে ওই বাড়ি তৈরি করা হয়েছে।
সোমবার বিকালে ভগবানপুর-২ ব্লকের বরোজে একটি মিছিল করেন তৃণমূল কর্মীরা। পরে পাঁউশি সেচ দফতরের বাংলোর মাঠে সভা হয়। রবিবার ওই ব্লকের মুগবেড়িয়াতেই সভা করেছিলেন শুভেন্দু। এদিন পাল্টা সভায় বক্তৃতা করেন মন্ত্রী অখিল গিরি। বিরোধী দলনেতা আক্রমণ করতে গিয়ে অখিল এ দিন বলেন, ‘‘শুভেন্দু এখন সবচেয়ে বড় হিন্দু। অথচ আজ থেকে ৩০ বছর আগে যখন তাঁর বাবা শিশির অধিকারী কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন, সে সময় স্থানীয় একটি শিব মন্দিরের পুকুর ভরাট করে বাড়ি তৈরি করেছেন।’’ কীভাবে ওই পুকুর ভরাট করে বাড়ি তৈরি হয়েছে, তার-ও তদন্ত তৃণমূল পরিচালিত বর্তমান কাঁথি পুরসভা করে দেখবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন অখিল।
এখানেই থামেননি অখিল। অধিকারী পরিবারের কর্তা তথা প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী এবং সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীকেও কটাক্ষ করেছেন তিনি। অখিল বলেন, ‘‘পৃথিবীতে অষ্টম আশ্চর্য রয়েছে। নবম আশ্চর্য হচ্ছে দিব্যেন্দু আর শিশির অধিকারী। তৃণমূলের সাংসদ হিসাবে দিল্লি থেকে বেতন পাচ্ছেন। অথচ ভিতরে ভিতরে তৃণমূলের ক্ষতি করে বিজেপিতে চলে যাচ্ছেন।’’ উল্লেখ্য, শিশিরবাবুকে গত বিধানসভা ভোটে বিজেপির কর্মসূচিতে হাজির থাকতে দেখা গিয়েছে। তাঁর সাংসদ পদ খারিজেরও আর্জি করছে তৃণমূল। অখিলের এ দিনের কটাক্ষ প্রসঙ্গে শুভেন্দুর ভাই তথা তৃণমূলেরই সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীর জবাব, ‘‘ওঁকে গুরুত্ব দেওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। তাই উনি কি বলেছেন, সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’’
এ দিনের সভায় ছিলেন স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য মানব পড়ুয়া, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও। অখিলের মতো রাজীবও শুভেন্দুকে নিশানা করেছেন এ দিন। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে আমার যা কিছু ক্ষোভ ছিল, সব এঁর জন্যই। একে খুশি করার জন্য আমাদের থেকে কেড়ে তাঁর পেট ভরিয়েছেন মমতা। এদেঁর মতই কিছু লোক আমাকে নানা রকমের প্রলোভন দেখিয়েছিল। নানা কথায় ভেসে গিয়েছিলাম। পরে বুঝতে পেরেছি আমার ভুল হয়ে গিয়েছে।’’ শুভেন্দুর মুখে তৃণমূলকে ‘তোলা মূল’ বলে কটাক্ষ করা প্রসঙ্গে রাজীব বলেন, ‘‘মুখে এত নীতি আর আদর্শের কথা বলে বেড়াচ্ছেন। যদি দলটা তোলামুল হয়, তবে পরিবারের লোকেরা সাংসদ পদ ছাড়ছেন না কেন?’’
অখিল এবং রাজীবের কটাক্ষ প্রসঙ্গে বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুদাম পন্ডিত বলেন, ‘‘অধিকারী পরিবারের হাত ধরে জেলায় বহু উন্নয়ন হয়েছে অতীতে। তাদেরকে এখন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা যে ভাষায় আর গালিগালাজ করছেন, তা জেলাবাসী ভালভাবে নেন না। আগামী পঞ্চায়েত ভোটে জেলায় সাফ হয়ে যাবে তৃণমূল।’’