হলদিয়ার একটি পুজো মণ্ডপে।
আগে পুজো হত নমো নমো করে। ‘নমো’ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসতেই জৌলুস বাড়ছে পুজোর।
কেমন সেই জৌলুস? শিল্পশহর হলদিয়ার ১৪ এবং ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের (বিএমএস) ব্যানারে অনুষ্ঠিত দু’টি বিশ্বকর্মা পুজোর উদ্বোধনে এ বারই প্রথম আসছেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি তরুণকান্তি ঘোষ। অথচ এর আগে বিএমএসের স্থানীয় নেতারাই পুজোগুলির উদ্বোধন করতেন।
পুজোর অন্য অনুসঙ্গও রয়েছে। টালিগঞ্জের কলাকুশলীদের উপস্থিতিতেই সাদামাটা পুজো এ বার রঙিন হয়ে উঠবে। আলোর রোশনাইয়ে ভাসবেন দেব কারিগর।
পুজোকে কেন্দ্র করে জনসংযোগ নতুন কিছু না। সব রাজনৈতিক দলই পুজো উপলক্ষে জনসংযোগ করে। তবে শাসক দল তৃণমূলের ক্ষেত্রে এই প্রবণতা তুলনায় বেশি। রাজনীতির হাত ধরেই আসে বিনোদন। পুজো উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হাজির হন টালিগঞ্জের কলাকুশলীরা। এ বার সেই ধারা গেরুয়া শিবিরে। কলকাতার দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে প্রথমদিকে বিজেপি ছাপ রাখার চেষ্টা করলেও তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। শিল্পশহর হলদিয়ায় বিশ্বকর্মা পুজো জাঁক হয় ভালই। এখানে মূলত পুজো করেন কলকারখানা কর্তৃপক্ষ এবং সেখানের শ্রমিক সংগঠন। বিএমএস এখানে বরাবরই পুজোর সঙ্গে যুক্ত থাকলেও প্রভাব, প্রতিপত্তিতে সেগুলি তেমন উল্লেখযোগ্য ছিল না। গত লোকসভা ভোটের পর সামগ্রিক ভাবে পরিস্থিতি বদলেছে। তার প্রভাব দেখা যাচ্ছে বিশ্বকর্মা পুজোতেও। হলদিয়ার ১৪ এবং ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের দু’টি পুজো উপলক্ষে থাকছে টানা কর্মসূচি। চারা গাছ বিতরণ, বস্ত্রবিতরণ, খিচুড়ি বিতরণ। সঙ্গে আরও নানা সমাজসেবামূলক কর্মসূচি।
ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদীপ বিজলী বলেন, ‘‘পুজো মানে তো শুধু দেবতাকে পুজো করা নয়, মানুষেরও কল্যাণ চিন্তা করা। সাধারণ মানুষের কাছাকাছি যাতে আরও সহজে পৌঁছনো যায়, সেই জন্যই পুজো-সহ একাধিক সমাজসেবামূলক কর্মসূচির পরিকল্পনা রয়েছে।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘এ বছরের বিশ্বকর্মা পুজোয় এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, ভেতরে ভেতরে অনেকেই আমাদের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হতে চাইছেন বা যুক্ত রয়েছেন। তৃণমূলের ভয়ে সেটার বহিঃপ্রকাশ ঘটছে না।’’
গেরুয়া শিবিরের চোরাস্রোতের তত্ত্ব উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের জেলা কার্যকরী সভাপতি শিবনাথ সরকার বলেন, ‘‘শিল্প শহরের শ্রমিক-সহ আমজনতা আমাদের পাশে ছিলেন,আছেন এবং থাকবেন। পুজোর বাহানায় গিমিক তোলার চেষ্টায় রয়েছে গেরুয়া শিবির।’’
শিল্পশহরের বন্দর এলাকায় টক্কর দিচ্ছে বিজেপি। এ বার লড়াই পুজোয়।