ফাইল চিত্র
মায়ের কাছে আগে সন্তান, তারপর নিয়ম-রীতি। মাতৃস্নেহের সেই রূপ দেখা গেল হাতির দলেও। সাধারণত ‘স্পর্শদুষ্ট’ শাবককে আর ফেরায় না হাতির দল, বিশেষ করে মানুষের ছোঁয়া লেগে থাকলে। শালবনির মহিষডোবায় অবশ্য কুয়োয় পড়ে যাওয়া ‘স্পর্শদুষ্ট’ শাবককে দলে ফিরিয়ে নিয়েছে মা হাতিই।
শনিবার সন্ধ্যায় শালবনির মহিষডোবায় একটি পরিত্যক্ত কুয়োয় পড়ে গিয়েছিল একটি হস্তিশাবক। কুয়োয় পড়ে চিৎকার জুড়ে দেয় সে। ভিড় জমে। খবর দেওয়া হয় বন দফতরে। ঘন্টা খানেকের চেষ্টায় কুয়োর মধ্যে থেকে শাবকটিকে উদ্ধার করেন বনকর্মীরা। তারপর রাতেই তাকে দলে ফিরিয়ে নেয় তার মা। মেদিনীপুরের এডিএফও পূরবী মাহাতো মানছেন, ‘‘ওই শাবকটি ফের হাতির দলে ফিরে গিয়েছে।’’ কিন্তু গায়ে মানুষের ছোঁয়া থাকলে যে হাতির দল শাবককে ফেরায় না? পূরবীর জবাব, ‘‘স্নেহের কাছে তো অনেক নিয়ম-রীতিই হার মানে।’’ অন্য এক বন আধিকারিকের মতে, ‘‘শাবকটির গায়ে খুব বেশি মানুষের ছোঁয়া লাগেনি। কুয়ো থেকে তোলার পরে মাত্র কয়েকজনই হাত দেন।’’
শালবনির ওই এলাকার পাশের জঙ্গলে হাতির দলটি ছিল। জঙ্গল থেকে লোকালয়ে ঢুকতে যাওয়ার সময়ই বিপত্তি ঘটে। স্থানীয়দের দেখে দলটি ফের জঙ্গলে ঢুকে যায়। বনকর্মীরা এসে শাবকটিকে উদ্ধার করেন। তাকে ফের জঙ্গলের দিকে পাঠানো হয়। বনকর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, এমন ক্ষেত্রে সাধারণত হাতির দল শাবকের জন্য অপেক্ষা না করেই ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যায়। পরবর্তী সময়ে দলটি আর শাবককে ফিরিয়েও নেয় না। মাস পাঁচেক আগে যেমন মেদিনীপুর গ্রামীণে ‘স্পর্শদুষ্ট’ শাবককে না নিয়েই চলে গিয়েছিল হাতির দল।
সে দিক থেকে শালবনির ঘটনা ব্যতিক্রমী। রবিবার মহিষডোবার অদূরেই ছিল হাতির দলেই ছিল শাবকটিও। বনকর্মীরা জানাচ্ছেন, কুয়ো থেকে উদ্ধারের পরে শাবকটি সুস্থই রয়েছে।