হাসপাতালে অলককে দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড। নিজস্ব চিত্র।
সরকারি প্রকল্প আমজনতার কাছে পৌঁছে দিতে বিধানসভা ভোটের আগে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি চালু করেছে রাজ্য সরকার। সেই কর্মসূচিতে ‘স্বাস্থ্য সাথী’ কার্ড পেতে হিড়িক পড়েছে। সরকারি তরফেও দ্রুত ওই কার্ড পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। গত কয়েক সপ্তাহে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত এমন উদাহরণ দেখা গিয়েছে ভুরিভুরি। এবার পূর্ব মেদিনীপুরে হাসপাতালে গিয়ে রোগীর পরিবারকে দেওয়া হল স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড।
স্থানীয় সূত্রের খবর, মহিষাদলের কিসমত নাইকুন্ডি গ্রাম পঞ্চায়েতে ২০ ডিসেম্বরে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। ওই শিবিরে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের জন্য আবেদন করেছিলেন সরবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব অলক কুমার মণ্ডল। এর পরে অসুস্থ হওয়ায় ৮ জানুয়ারি অলককে তমলুক জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তিনি হাসপাতালে ভর্তি হতেই তৎপর হয় মহিষাদল ব্লক প্রশাসন। শনিবার অমৃতবেড়িয়া গ্রামে ‘স্বাস্থ্য সাথী’ কার্ডের শিবির চলছিল। সেখানে থেকে কাজ শেষ করার পর মেশিন নিয়ে জেলা সদর হাসপাতালে হাজির হন প্রতিনিধিরা।
হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্স-সহ অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা ব্যাপারস্যাপার দেখে অবাক হয়ে যান। ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকবৃন্দ সমস্ত বিষয় বুঝিয়ে বলার পরে চিকিৎসকের অলকের হাতের ছাপ নেওয়ার অনুমতি দেন। হাসপাতালের শয্যাতেই ছবি তোলা হয় তাঁর। এর পরেই স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য দেবব্রত চক্রবর্তী এবং ব্লক আধিকারিকদের সহযোগিতায় তমলুক জেলা হাসপাতালে অলকের হাতে স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড তুলে দেওয়া হয়।
মহিষাদল ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, অলকের চিকিৎসার জন্য অর্থের প্রয়োজনের বিষয়টি জানতে পেরেই দ্রুত পদক্ষেপ করা হয়েছে। শনিবার থেকেই কার্ড সক্রিয় করে দেওয়া হয়েছে। আপাতত কার্ড থেকেই পরিষেবা পাবেন অসুস্থ ব্যক্তি। মহিষাদলের বিডিও যোগেশচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘অলক কুমার মণ্ডল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তমলুক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শুনেই আমরা কার্ড পৌঁছে দিতে তৎপর হয়। শনিবার রাতেই জেলা সদর হাসপাতালে গিয়ে আমাদের ব্লকের আধিকারিকেরা ওঁর হাতে কার্ড তুলে দিয়েছে। দ্রুত কার্ড দিতে পেরে আমাদেরও ভাল লাগছে।’’
তমলুক জেলা সদর হাসপাতাল সূত্রের খবর, আপাতত অলক কিছুটা সুস্থ রয়েছেন। অলোকের কথায়, ‘‘দুয়ারের সরকার কর্মসূচি সত্যিই খুব কাজে দিয়েছে। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড হাতে এসে যাওয়ায় রোগের খরচের চিন্তা থেকে কিছুটা মুক্তি পেলাম। নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের পক্ষে সত্যিই এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ব্লক প্রশাসনকে ধন্যবাদ।’’