স্কুলে খাবার বিলি। নিজস্ব চিত্র
জেলার বেশিরভাগ জায়গায় স্কুল বাড়িতে কোয়রান্টিন কেন্দ্র করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে প্রশাসনকে। তবে কোথাও কোথাও মিলছে সহযোগিতাও।
বেলদা থানার হেমচন্দ্র পঞ্চায়েত এলাকার বড়মোহনপুর হাইস্কুলের কোয়রান্টিন কেন্দ্রে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের পালা করে দেওয়া হচ্ছে মাছ, মাংস, ডিম। মূলত স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের উদ্যোগেই এই ব্যবস্থা। তবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন এমন কয়েকজনও এই উদ্যোগের পিছনে রয়েছেন। রবিবার ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের মাছ-ভাত খাওয়ানো হল। সঙ্গে ছিল আলু ভাতে, শাক ভাজা, মাছের টক। কয়েকদিন আগে খাওয়ানো হয়েছে মাংস-ভাত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই স্কুল বাড়িতে রয়েছেন ৫০ জন। মূলত মহারাষ্ট্র, গোয়া, গুজরাত থেকে আসা ওই পরিযায়ীদের বাড়ি স্থানীয় বড়মোহনপুর, আম্বিডাঙর, গুড়দলা, গোবিন্দপুর এলাকায়। রান্নার জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের কার্যালয়। স্থানীয় বাসিন্দা আশিস কুমার ঘোষ জানান, রান্নার পরে প্যাকেট বন্দি খাবার এনে স্কুলের গেটের সামনে রাখা হচ্ছে। পরিযায়ীরা সেখান থেকে প্যাকেট নিয়ে যাচ্ছেন।
বেলদায় এই ইতিবাচক ছবি দেখা গেলেও খড়্গপুর শহরের পরিস্থিতি অবশ্য উল্টো। সেখানে স্কুলে কোয়রান্টিন কেন্দ্র খোলায় বাধা দিতে রাত পাহারায় নামলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে খড়্গপুর শহরের সুভাষপল্লি এলাকায় জনকল্যাণ বিদ্যায়তন সংলগ্ন এলাকায় বাসিন্দারা বৈঠকে বসেন। রাতে যাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের আনা না হয় সেটা নিশ্চিত করতে রাত পাহারার সিদ্ধান্ত হয়। স্কুলে যাওয়ার রাস্তা গাছ-বাঁশ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। পুলিশ গেলে উত্তেজনা চরমে ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দা পলু চক্রবর্তী, প্রশান্ত সরকারদের দাবি, ‘‘এই এলাকাটি ঘিঞ্জি। এখানে পরিযায়ী শ্রমিকদের রাখা হলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা আছে। তাই রাত পাহারার সিদ্ধান্ত। পুলিশের আপত্তিতে রাস্তা খুলে দিয়েছি। রাত পাহারা চলবে।”
খড়্গপুর পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ভিন রাজ্য ফেরত পরিযায়ীদের জন্য কোয়রান্টিন কেন্দ্র গড়তে ২০টি স্কুলের তালিকা তৈরি হয়েছে। সেই তালিকা সামনে আসার পর থেকেই শ্রীকৃষ্ণপুর, ভবানীপুর, সুভাষপল্লি-সহ একাধিক এলাকায় ক্ষোভে সরব হয়েছেন এলাকাবাসী। বিড়ম্বনা বেড়েছে প্রশাসনের। মহকুমাশাসক বৈভব চৌধুরী বলেন, “পরিযায়ী শ্রমিকদের রাখার বন্দোবস্ত শুরু হয়েছে। এটা ঠিক যে, প্রস্তাবিত ২০টি স্কুলের মধ্যে কয়েকটি ঘিঞ্জি এলাকায় রয়েছে। সেগুলি বাদ দেব। কিন্তু কিছু স্কুল তো নিতে হবেই। মানুষকে বোঝাব। চাহিদা অনুযায়ী আপাতত ৬-৭টি স্কুল পেলেই বাইরে থেকে আসা মানুষকে রাখা যাবে।”