জ্বরের প্রকোপ কমছেই না পূর্ব মেদিনীপুরে। কাঁথির দেশপ্রাণ ব্লকের পর এ বার আক্রান্ত খেজুরি-২। তবে এ ক্ষেত্রে প্রথম থেকেই তৎপর প্রশাসন।
খেজুরির নিজ কসবা গ্রামের এক বাসিন্দার জ্বর চলছিল গত ছ’দিন ধরে। খবর পাওয়া মাত্রই তাঁকে শিলাবেড়িয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানোর নির্দেশ দেন খেজুরি-২ বিডিও পুলককান্তি মজুমদার। এ ছাড়াও গোপিচক ও পানখাই গ্রামে শুরু হয়েছে সচেতনতার প্রচার। আতঙ্কিত হতে বারণ করা হয়েছে গ্রামবাসীদের। চলছে নজরদারিও। শনিবার থেকেই গ্রামে গিয়ে রক্তের নমুনা সংগ্রহ হচ্ছে।
এ দিকে নড়েচড়ে বসেছে কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লক স্বাস্থ্য দফতরও। শনিবার সেখানে স্বাস্থ্যকর্মীদের পাঠান ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক পার্থপ্রতিম পাত্র। তাঁর কথায়, “এই টিম রিপোর্ট দেবে। তা দেখে জেলা উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে রিপোর্ট দেওয়া হবে।” তবে প্রশাসনের এই ভূমিকায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা।
শনিবার হিঞ্চির পঞ্চায়েত সদস্য আকবর আলি খান বলেন, “শুক্রবার বিডিও এবং ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে জ্বরের পরিস্থিতি জানানো হয়। শনিবার টিম এলেও রক্তের নমুনা সংগ্রহ করলেন না স্বাস্থ্যকর্মীরা। গ্রামজুড়ে ডেঙ্গি-আতঙ্কের মধ্যে কোনও সচেতনতার প্রচারও নেই।”
স্থানীয় সাম্মাদ আলি খানের কথায়, “পারুলিয়া ও হিঞ্চি নিচু হওয়ার কারণে অল্প বৃষ্টিতেই জল জমে। তবে তা নিয়ে ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের মাথাব্যথা নেই।” তবে জেলা উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সমুদ্র সেনগুপ্ত শনিবার বলেন, “ব্লক কী রিপোর্ট দেয় দেখি। প্রয়োজনে নিজেই গ্রামে যাব। তেমন রিপোর্ট পেলে মেডিক্যাল ক্যাম্প হবে।”
তিনি আরও জানান, গোপীচকের ৬৭ জন ও হিঞ্চির ৯ জনের ডেঙ্গি বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে রক্তপরীক্ষা হয়নি এখনও। এ দিকে শুক্রবার রাতে হিঞ্চি, পারুলিয়া ও সরদার পঞ্চায়েত সদস্যদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন দেশপ্রাণের বিডিও মনোজ মল্লিক। জ্বর পরিস্থিতি খতিয়ে প্রতিনিধি দলও তৈরি হয়েছে। বিডিও জানান, রবিবার গ্রামে যাবে তারা।
এর পাশাপাশি জ্বরের প্রকোপ দেখা দিয়েছে হলদিয়ার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে। বেশ কয়েক দিন ধরে একই পাড়ার ছ’জনের জ্বর চলায় এলাকায় মেডিক্যাল টিম পাঠায় পুরসভা। আক্রান্তদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে তমলুক জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুরপারিষদ (স্বাস্থ্য) আজিজুর রহমান জানান, এলাকায় স্বাস্থ্য কর্মীদের পাঠানো হয়েছে। এলাকায় জল জমে আছে কি না, তা দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে, নন্দীগ্রামের বেশ কয়েকটি গ্রামেও জ্বরের প্রকোপ দেখা দিয়েছে।
রেয়াপাড়া হাসপাতালের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক শেখ নওয়াজুর রহমান জানান, আমদাবাদ এলাকায় কুমিরমারা এলাকায় ৩৫ জনের জ্বর হয়েছে। এ দিন ওই এলাকায় স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকেরা ক্যাম্প করেন। আক্রান্তদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। হয় সচেতনতা শিবিরও।