অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। নন্দীগ্রামের জেলায় পুরভোটও আছে। আর তারপর ২০২৪ সালে লোকসভা ভোট। পরপর এই নির্বাচকে সামনে রেখেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় দলের সংগঠন ঢেলে সাজায় জোর দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বার্তা, পার্টি নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। এই পরিস্থিতিতে স্বছতা বজায় রেখে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। নিজেদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি করা চলবে না।
তৃণমূলের তমলুক ও কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি, চেয়ারম্যান, সব বিধায়ক ও যুব, মহিলা, শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতিদের নিয়ে মঙ্গলবার কলকাতায় বৈঠক করেন অভিষেক। ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। দলীয় সূত্রের খবর, আইপ্যাক ও অভিষেকের প্রতিনিধিরাও বৈঠকে ছিলেন। জেলার প্রতিটি ব্লকে দলের সংগঠনকে ঢেলে সাজার লক্ষ্যে আগামী চার-পাঁচদিনের মধ্যেই ব্লকে নতুন পদাধিকারীদের নাম ঘোষণা হবে বলে জানানো হয়েছে। তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের প্রাক্তন সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘‘ পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখে জেলায় সংগঠনকে শক্তিশালী করার পরামর্শ দিয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। আর দলের সাংগঠনিক রদবদলের বিষয়টি কয়েকদিনের মধ্যে জানানো হবে।’’ কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তরুণ মাইতি জুড়ছেন, ‘‘পঞ্চায়েতে অবাধ নির্বাচন করার পাশাপাশি আরও বেশি বেশি কর্মসূচি ঐক্যবদ্ধ ভাবে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ব্লক সভাপতি কারা হবেন, সে সম্পর্কেও সকলের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল।’’
ব্লক সভাপতি পদে কারা বসবেন তা নিয়ে দুই সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ও চেয়ারম্যান ছাড়াও বিধায়কদের থেকে পৃথকভাবে প্রস্তাব জমা পড়েছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। ‘আইপ্যাক’ ও অভিষেকের নিজস্ব প্রতিনিধিরাও নাম প্রস্তাব করেছেন। চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন শীর্ষ নেতৃত্ব। একই ভাবে তৃণমূলের যুব, মহিলা ও শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতিরা ব্লকের পদাধিকারীদের নাম প্রস্তাব করেছেন। এ দিন সেই সব নাম নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে খবর।
গত বছর বিধানসভা ভোটে পূর্ব মেদিনীপুরে ১৬টি কেন্দ্রের মধ্যে ৯টিতে জেতে তৃণমূল। ৭টি আসন পায় বিজেপি। এর মধ্যে নন্দীগ্রামে খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যাকে হারিয়ে জেতেন শুভেন্দু অধিকারী। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর জেলায় তাই বাড়তি গুরুত্ব থাকবেই। সেই মতো এ দিনের বৈঠকে পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনে জেলার প্রতিটি ব্লকে ভাল ফল করতে এখন থেকে প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছেন অভিষেক। চলতি বছরে হলদিয়া ও পাঁশকুড়াতেও পুর-নির্বাচন রয়েছে। তাই যাবতীয় কোন্দল ভুলে লাগাতার কর্মসূচি নিতে বলেছেন অভিষেক।
দলীয় সূত্রে খবর, এ দিন অভিষেক প্রথমে তমলুক সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে অভিষেকের বার্তা, পঞ্চায়েত ও পুরসভা নির্বাচনে গা জোয়ারি করা যাবে না। যাঁদের জেতার সম্ভাবনা রয়েছে এমন নেতা-কর্মীদের প্রার্থী করতে হবে। তমলুক সাংগঠনিক জেলার নন্দীগ্রাম, নন্দকুমার, পাঁশকুড়া, কোলাঘাট-সহ বেশ কয়েকটি ব্লকে নেতৃত্বের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে কর্মীরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন। তাই কোন্দল বন্ধ করে সবাইকে একসাথে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন অভিষেক। সূত্রের খবর, তিনি বলেছেন, ‘‘আপনারা সকলেই দ্বায়িত্বশীল। নির্বাচনে লড়াই ও পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। স্থানীয় নেতৃত্বদের মধ্যে মনোমালিন্য মিটিয়ে সকলকে নিয়ে কাজ করতে উদ্যোগী হন।’’