দাসপুরের চেঁচুয়া গ্রামে শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
বাম শাসন পরিবর্তন করতে তৃণমূল নেত্রীর স্লোগান ছিল ‘বদলা নয় বদল চাই’। বদলানোর কথা বললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মোদীর বারবার সবকিছু বদলানোর প্রবণতা রুখতে বদলের ডাক দিলেন তিনি। সঙ্গে এ-ও মনে করিয়ে দিলেন, রাজ্যে কোনও বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল হেরে গেলেও সেখানকার মহিলারা লক্ষ্মীর ভান্ডার থেকে বঞ্চিত হন না।
সোমবার দাসপুরের চেচুয়া থেকে শুরু হয়েছিল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নব জোয়ার কর্মসূচি। মাঝে ডেবরায় ছিল তাঁর পথসভা। সেখানেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করেছেন অভিষেক। আগামী লোকসভা ভোটে তাঁকে পাল্টানোর ডাক দিয়েছেন। তিনি বলেন, "সব জায়গার নাম বদল করছেন। বাংলায় ক্ষমতায় এলে এই জায়গাটার নাম আর মেদিনীপুর থাকত না। মোদিনীপুর করে দিত। পশ্চিম মেদিনীপুর থাকত না। পশ্চিম মোদিনীপুর হয়ে যেত।" গত বিধানসভা ভোটে জেলার মানুষ তৃণমূলের পাশে থাকায় তাঁকে বলতে শোনা যায়, "আমি নতমস্তকে আপনাদের কৃতজ্ঞতা জানাই যে, আপনারা রুখে দাঁড়িয়েছেন। উনি খুব পাল্টানো পছন্দ করেন। মানুষ ওঁকে ২০২৪ এ পাল্টে দেবেন।" অভিষেক বলেন, "হঠাৎ হঠাৎ করে তুঘলকি সিদ্ধান্ত। নোটবন্দি করলেন। সংসদের নতুন ভবন তৈরিতে ১,৫০০ কোটি টাকা খরচ হল। উনি যবে থেকে এসেছেন, খালি পাল্টানোর রাজনীতি। প্রধানমন্ত্রী যদি দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতেন, তা হলে দেশের এই দুর্দশা হত না।"
রাজ্য রাজনীতিতে ফিরে অভিষেক বলেন, "এই মেদিনীপুর জেলায় আমরা দু'টি আসনে হেরেছি। একটি খড়্গপুর টাউন ও অন্যটি ঘাটাল। এই দু'টি আসনে খুব অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরেছি। তা-ও একটায় তিনশো-চারশো ও আরেকটায় তিন-সওয়া তিন হাজারের ব্যবধানে। কিন্তু দু'টি বিধানসভা যদি দেখেন তা হলে একটাও মহিলা পাবেন না যিনি বলবেন আমি তৃণমূলকে ভোট দিইনি বলে লক্ষ্মীর ভান্ডার পাচ্ছি না। কিন্তু বিজেপি সরকার বাংলা হারার পরে বাংলার প্রাপ্য টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। একশো দিনের কাজের টাকা, সর্বশিক্ষা, রাস্তা, জল সব টাকা বন্ধ।"
এ দিন ডেবরা থেকে অভি-যাত্রা পৌঁছয় পিংলা হয়ে সবংয়ে। পিংলার মুণ্ডুমারি থেকে জামনায় ছিল রোড-শো। দু'ধারে ছিল ভিড়। সবংয়ে যাওয়ার পথে এগারো মাইলে দাঁড়িয়ে পড়ে অভিষেকের কনভয়। গাড়ি থেকে নেমে অভিষেক সটান ঢুকে পড়েন একটি চপের দোকানে।
সেখানে চপ-চা খেয়ে ফের সবংয়ের উদ্দেশে রওনা দেন। এ দিন রাতে সবংয়ে চলেছে ১০৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থী বাছাইয়ের ভোটাভুটি। অভিষেক অধিবেশনে যোগ দিয়ে শেষে মঞ্চে বক্তৃতা করেন। তিনি বলেন, ‘‘বুথ সভাপতি দলীয় প্রার্থীকে বদ্ধপরিকর হলে তাঁকে কেউ হারাতে পারবে না।’’