আগুনে পুড়ে গিয়েছে বাড়ির কিছু অংশ। নিজস্ব চিত্র
পারিবারিক অশান্তির জেরে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছেন বাবা-মা। তার পর সন্তানদের হাত ধরে বাপেরবাড়ির পথ ধরেছেন স্ত্রীও। রাগে-দুঃখে বাড়িতে আগুন দিলেন এক আলু ব্যবসায়ী। এই ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের খেজুরতলা এলাকায়।
দাসপুর থানার চাঁইপাটের সাতমাথা-খেজুরতলা এলাকার বাসিন্দা পরেশ মণ্ডল পেশায় আলু ব্যবসায়ী। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে পরেশের বাড়ি থেকে আচমকা বিস্ফোরণের আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁরা দেখতে পান পরেশের বাড়িতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। প্রত্যদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, তাঁরা জানতে পারেন, রান্নাঘরে দু’টি গ্যাস সিলিন্ডারে আগুন ধরিয়েছেন পরেশ নিজেই। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পরেশের সঙ্গে তাঁর বাবা-মায়ের অশান্তি লেগেই থাকত। দিন দুয়েক আগে পরেশের সঙ্গে তাঁর বাবা-মায়ের অশান্তি হয়। এর পর তাঁর বাবা-মা বাড়ির দলিলপত্র এবং গয়নাগাঁটি নিয়ে কলকাতা নিবাসী ছোট বোনের বাড়িতে চলে যান। ঘটনাচক্রে এর পর পরেশের স্ত্রী দুই মেয়ে এবং ছেলেকে নিয়ে বাপেরবাড়ি চলে যান।
প্রতিবেশীদের মত, এই ঘটনার পর ক্ষোভে-দুঃখে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন পরেশ। রাতেই দাসপুর থানার পুলিশ এবং দমকল ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পরেশের মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে। প্রতিবেশীদের দাবি, এই সময়ে বাড়ির সকলের হঠাৎ করে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়া মেনে নিতে পারেননি পরেশ। তাই রাগে আগুন লাগিয়েছেন নিজের বাড়িতেই। পরেশের আত্মীয় নির্মল সামন্ত বলেন, ‘‘মানসিক চাপ থেকে এমন একটি কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন তিনি। আগুন ধরিয়ে বাড়ির বাইরে চলে আসায় পরেশের কোনও ক্ষতি হয়নি। তবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাড়িটি।’’
বাড়িতে আগুন লাগিয়েও রাগ মেটেনি পরেশের। ক্ষোভের সুরে তিনি বলছেন, ‘‘ওরা ঘর ছেড়ে চলে গিয়েছে। আমার বোন বলছে, ‘তুই বাবা-মাকে মেরেছিস।’ জামাই বলছেন, ‘তোমার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।’ আমি ভাবলাম, আমার মেয়ের বিয়ে বলে ওরা রাগ দেখাচ্ছে আমার উপর। তাই আমিও বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেব। এর পর চচ্চড়ি, খিচুড়ি রান্না করেছি। তার পর ঘরে আগুন দিয়ে দিয়েছি। ব্যস।’’