বাবার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে আপত্তি জানানোয় একাদশ শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল এক মহিলার। বুধবার পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (দ্বিতীয়) কুমকুম সিংহ জ্যোৎস্না মোহান্ত নামে ওই মহিলাকে এই কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
জেলা আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, তমলুক শহরের আবাসবাড়ি এলাকার বাসিন্দা শুভঙ্কর দে কাজের সূত্রে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে থাকতেন। বালুরঘাটে থাকার সময়ই জ্যোৎস্না মোহান্ত নামে বছর তিরিশের এক স্থানীয় মহিলার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে ওই ব্যক্তি বদলি হয়ে তমলুকে চলে আসেন। জ্যোৎস্নাদেবীও প্রথমে তমলুক শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে নন্দকুমারে ও পরে শহর সংলগ্ন গঞ্জনারায়ণপুরে ভাড়া বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। এমনকী ওই মহিলা শুভঙ্করবাবুর বাড়িতেও নিত্য যাতায়াত শুরু করেন। এ নিয়ে পরিবারে অশান্তিও হত।
২০১৩ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে জ্যোৎস্নাদেবী শুভঙ্করবাবুর বাড়িতে এলে শুভঙ্করবাবুর মেয়ে শুভশ্রী আপত্তি জানায়। সেই সময় ওই মহিলাকে শুভশ্রী মাথা ফাটিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। পরে আবার শুভশ্রীকে তিনি খুর দিয়ে আক্রমণ করেন বলে অভিযোগ। শুভশ্রীর গলা, হাত-সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে একাধিকবার ক্ষুর দিয়ে আঘাত করা হয়। ঘটনাস্থলেই শুভশ্রীর মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে তমলুক থানার পুলিশ এসে ওই কিশোরীর মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরে পুলিশ জ্যোৎস্নাদেবীকে নন্দকুমার এলাকা থেকে গ্রেফতার করে । পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ক্ষুরটি বাজেয়াপ্ত করে। ওই কিশোরীর মা আরতিদেবীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ জ্যোৎস্নাদেবী ও কিশোরীর ঠাকুমা কমলাদেবীর বিরুদ্ধে খুন, জোর করে বাড়িতে ঢোকা, আঘাত করা প্রভৃতি অভিযোগে মামলা করে।
জ্যোৎস্নাদেবীর জেল হেফাজত হয়। ওই মামলার বিচারপর্ব চলাকালীন জ্যোৎস্নাদেবী প্রায় একবছর ধরে জেল হেফাজতে ছিলেন। মামলায় সরকার পক্ষের আইনজীবী সুব্রত মাইতি জানান, মামলার শুনািনর পর বিচারক অভিযুক্ত জ্যোৎস্না মহান্তিকে দোষী সাব্যস্ত করেন। অপর অভিযুক্ত ওই কিশোরীর ঠাকুমাকে খালাস করা হয়।