ফাইল চিত্র।
সামনে পুজো। পুজোর মুখেই তৃণমূল সরকারের ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের সহায়তা পেলেন মেদিনীপুরের কবিতা দেবনাথ। কবিতা বিজেপির সমর্থক বলেই পরিচিত ছিলেন। ফুটপাতে চা দোকান চালানো কবিতা বলছিলেন, ‘‘বিজেপি করেছি, অস্বীকার করছি না। তবে এখন আমি তৃণমূলই করছি। দিদি (মুখ্যমন্ত্রী) আছেন বলেই আমার মতো মহিলারা উপকৃত হচ্ছেন। এমন প্রকল্প আর অন্য কোনও রাজ্যে নেই।’’ কবিতা জানাচ্ছেন, তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ওই প্রকল্পের দু’মাসের সহায়তা জমা পড়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘দু’মাসের টাকা একবারেই এসেছে অ্যাকাউন্টে। আমরা খুবই খুশি।’’
পুজোর মুখে অ্যাকাউন্টে প্রকল্পের সহায়তা পৌঁছতেই আনন্দে উৎফুল্ল গৃহলক্ষ্মীরা। পশ্চিম মেদিনীপুর জুড়ে যেন খুশির হাওয়া! ওই প্রকল্পের সহায়তা পেয়েছেন পূর্ণিমা রায়, বন্দনা মান্নারাও। পূর্ণিমা, বন্দনারা বলছেন, ‘‘শুনেছিলাম টাকা ঢুকছে। ব্যাঙ্কে পাশবই আপডেট করাতে গিয়ে দেখি একসাথে দু’মাসের টাকা ঢুকেছে।’’ তাঁরা জানাচ্ছেন, সেপ্টেম্বরের টাকা ঢুকেছে। অক্টোবরের টাকাও অগ্রিম ঢুকেছে। পূর্ণিমারা বলছেন, ‘‘সামনে পুজো। তার আগে একসাথে দু’মাসের সহায়তা পেয়ে সুবিধাই হল। দিদির জন্যই এটা সম্ভব হল।’’
পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘যাঁদের আবেদন গৃহীত হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। কোনও সমস্যা হবে না।’’ জেলা প্রশাসনের এক সূত্র জানাচ্ছে, রাজ্য থেকে টাকা ছাড়া শুরু হয়েছে। একলপ্তেই জেলার সাড়ে সাত লক্ষেরও বেশি মহিলা এই প্রকল্পে উপকৃত হচ্ছেন। পশ্চিম মেদিনীপুরে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে’ ৯,৩৫,০৪৭টি আবেদন এসেছিল। ৭,৫৮,৭৪৬টি আবেদন যাচাই শেষে অনুমোদিত হয়েছে। কিছু বাতিল হয়েছে। ১,৭৫,৫১৮টি আবেদন অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
জেলায় এই প্রকল্পের অগ্রগতি ভালই। যাচাই শেষে অনুমোদনের ক্ষেত্রে রাজ্যের হার যেখানে ৭৪.১৬ শতাংশ, সেখানে জেলার হার ৮১.২৩ শতাংশ। অর্থাৎ, জেলায় ১০০টি আবেদনপিছু গড়ে ৮১টি আবেদনই যাচাই শেষে অনুমোদিত হয়েছে। জেলার এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, ৭,৫৮,৭৪৬টি আবেদন যাচাই শেষে অনুমোিদত হয়েছে। মেদিনীপুরের পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান সৌমেন খান বলছেন, ‘‘উৎসবের মুখে আবেদনকারী মহিলাদের অ্যাকাউন্টে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা ঢুকেছে। সকলেই দু’মাসের টাকা পেয়েছেন। মহিলারা খুব খুশি।’’
উল্লেখ্য, ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্প ঘোষণার সময়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেয়েছিলেন, পুজোর আগেই যেন উপভোক্তা মহিলাদের হাতে টাকা পৌঁছে দেওয়া যায়। সেই মতোই পদক্ষেপ করা হয়েছে।