—প্রতীকী চিত্র।
উত্তেজনায় দাঁড়ি পড়েনি ঘাটালের শোলাগেড়িয়ায়। বুধবার তৃণমূলের বিজয় মিছিলকে কেন্দ্র করে সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে তপ্ত হয়েছিল এলাকা। মারধর, বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে সরব হয়েছিল দু’পক্ষই। বৃহস্পতিবার সকালে আবার এক তৃণমূল কর্মীর মাথা ফাটানোর অভিযোগ ওঠে। অভিযুক্ত সিপিএম কর্মীদের উপর পাল্টা চড়াও হয় তৃণমূলের লোকজনও। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এলাকায় পুলিশ পিকেট বসেছে। শুরু হয়েছে ধড়পাকড়। এ দিন দু’পক্ষের ১৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার শোলাগেড়িয়ায় তৃণমূলের বিজয় মিছিল চলাকালীন পাথর ছোড়ার অভিযোগ ঘিরে গোলমালের সূত্রপাত। পাথরের আঘাতে সিপিএম সদস্য রাজিবুল ইসলাম আহত হন। আহত হন এক তৃণমূল কর্মীও। এরপরই দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। প্রথমে হাতাহাতি, পরে লাঠি-রড নিয়ে চলে মারধর। বাড়িতে ঢুকে হামলার অভিযোগও ওঠে। দু’পক্ষই বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট, মারধরের অভিযোগ তুলেছে। শোলাগেড়িয়া লাগোয়া চকসাদি, বাঘাগেড়িয়া এলাকাতেও উত্তেজনা ছড়ায়।
বুধবারের সংঘর্ষে দু’পক্ষের ৮জন জখম হয়েছিলেন। তাঁরা সকলেই ঘাটাল সুপার স্পেশালিটিতে ভর্তি। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে ফের নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়। এ দিন এক চা দোকানে এক তৃণমূল কর্মীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে সিপিএমের বিরুদ্ধে। ওই তৃণমূল কর্মীর মাথা ফাটে। তাঁকেও ঘাটাল সুপার স্পেশালিটিতে পাঠানো হয়। এরপর তৃণমূল কর্মীরা জড়ো হয়। উত্তেজনা তৈরি হয়। পুলিশ গিয়ে দু’পক্ষকে সরিয়ে দেয়।
ভোটের ফল প্রকাশের পরে বিক্ষিপ্ত কিছু অশান্তি ছাড়া ঘাটালে এ ক’দিনে বড় অশান্তি বাধেনি। ঘাটালের উত্তর অংশের কিছু গ্রামে গোলমালে জড়িয়েছিল তৃণমূল-বিজেপি। ইড়পালায় বিজেপির উপ-প্রধান গ্রেফতারও হন। এ বার ঘাটালের দক্ষিণে শোলাগেড়িয়া সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষ বাধল। শোলাগেড়িয়া এলাকাটি ঘাটালের দেওয়ানচক ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন। লোকসভা ভোটে ঘাটাল ব্লকের মধ্যে ওই পঞ্চায়েত এলাকাতেই তৃণমূল সব থেকে বেশি ‘লিড’ পেয়েছে। সেখানে সাংসদ দেব বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির সূচনা করেছেন। এমনিতে গোটা পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের দাপট থাকলেও শোলাগেড়িয়া এখনও সিপিএমের শক্ত ঘাঁটি। এই এলাকার পঞ্চায়ত সদস্যও সিপিএমের। তবে সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ভোটে শোলাগেড়িয়ায় অল্প ব্যবধানে তৃণমূল এগিয়ে গিয়েছে।
তৃণমূলের ঘাটাল ব্লক সভাপতি দিলীপ মাজি এবং প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দোলইয়ের অভিযোগ, “বিজয় মিছিলের উপর হামলা চালিয়ে উত্তেজনা তৈরি করেছে সিপিএম। আমাদের দলের ৬ জন কর্মী জখম হয়েছেন।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক সাঁতরার পাল্টা দাবি, “তৃণমূল ঘরে ঢুকে মারধর করছে। আমরা চাই গোলমাল বন্ধ হোক। শান্তি ফেরাতে দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করতে পুলিশকে আবেদন জানানো হয়েছে।” জেলা পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, “গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। টহল চলছে।”