—প্রতীকী চিত্র।
ব্রাহ্মণ সেজে হাতে ঠাকুর নিয়ে বাড়ির উঠানে হাজির পুরোহিত। গৃহকর্ত্রীকে দেখতে পেয়ে ঠাকুরের উদ্দেশ্যে সাধ্যমতো সাহায্য করার আবদার। তারপর বাড়িতে ঢুকে গল্প-গুজব। গ্রহদোষ কাটানো-সহ সোনা দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি। এক সময় সকলের অগোচরে বাড়ির মহিলাদের সব গয়না নিয়ে চম্পট দিল এক দুষ্কৃতী। বুধবার দাসপুর থানার রাজনগর লাগোয়া বেলবেড়িয়া গ্রামে এমন অভিনব কায়দায় চুরির ঘটনা চাউর হতেই হইচই শুরু হয়ে যায় এলাকায়। দুষ্কৃতীর সন্ধানে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ
বুধবার তখন সকাল সওয়া এগারোটা। বেলবেড়িয়া গ্রামে নবকুমার ঘাঁটি বাড়ির মহিলা সদস্যেরা-সহ সকলে কাজে ব্যস্ত। সে সময় এক প্রতারক রীতিমতো ব্রাহ্মণ সেজে হাতে গোপাল ঠাকুর নিয়ে বাড়ির দরজার সামনে হাজির হন। মহিলাদের কাছে সাহায্য চায় সে। কথাবার্তার মাঝেই বাড়িতে ঢোকার জন্য আবদার করতে থাকে ওই প্রতারক পুরোহিত। হাতে ঠাকুর দেখে মহিলারাও রাজি হন। বাড়িতে ঢুকে বসার পর শুরু হয় নানা গল্প। মহিলাদের গোপাল ঠাকুর নেওয়ার জোরাজুরি করতে থাকেন। ‘ব্রাহ্মণের’’ মুখে ঠাকুর নেওয়ার কথা শুনে মহিলারা একেক করে ওই ঠাকুর কোলে নেন। এরপরই গ্রহদোষ কাটানোর গল্প শুরু করে সে। এ কথা সে কথা বলার ফাঁকেই নাকি বাড়ির সদস্যদের দোষ কাটানোর জন্য রাজি করিয়ে নেয়। মহিলাদের সমস্ত গয়না ঠাকুরের কাছে জমা দিতে বলে। মহিলারাও শরীর থেকে সব গয়না খুলে সেখানে জমা রাখেন। তবে পুলিশ তদন্ত করে জানতে পেরেছে, সোনার গয়না দ্বিগুণ করে দেওয়ার গল্পও করে। আর তাতেই মহিলারা সব গয়না খুলে দেন। সেই গয়না নিয়ে কাপড়ে বেঁধে পুজো করতে শুরু করে। তার ফাঁকেই বাড়ির সদস্যদের বেলপাতা,ফুল,তুলসি পাতা আনতে বলে। দুপুরে ভাত খাওয়ার কথাও বলে। এরপরই শৌচালয়ে যাওয়ার বাহানা করে সে। সেখান থেকে ফিরে সে জানায়, পাশের বাড়ির লোক তাকে ডেকেছে। ঠাকুর নিয়ে যেতে হবে। তবে গয়না সব রইল। ফিরে এসে প্রত্যেকের গয়না ফেরত দেওয়া হবে।
বেশ কিছুক্ষণ পর পুরোহিত না ফেরায় খোঁজখবর শুরু হয়। কিন্তু তার সন্ধান মেলেনি। দেখা যায়, গয়না নিয়েই চম্পট দিয়েছে সে। সঙ্গে নিয়েছে গিয়েছে বাইকের চাবিও। তবে এত কিছুর মধ্যে ওই ‘ব্রাহ্মণের’ ছবি মোবাইলে ক্যামেরা বন্দি করে রেখেছিলেন বাড়ির লোকজন। সে ই ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে দাসপুর থানার পুলিশ পৌঁছয়। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দুষ্কৃতীর সন্ধানের খোঁজ চলছে।