ফাইল চিত্র।
লকডাউন শিথিল পর্বে হাতে গোনা পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয়েছিল সৈকত শহর দিঘায়। কিন্তু ওল্ড দিঘার এক ব্যবসায়ীর করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর সামনে আসার পরে ফের সুনসান হয়েছে শহরের রাস্তাঘাট।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত বৃহস্পতিবার ওল্ড দিঘার এক ব্যবসায়ীর শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। এর পরে করোনা মোকাবিলায় তৎপরতা দেখা যায় পুলিশ-প্রশাসনের। মাস্ক ছাড়া পর্যটক এবং স্থানীয়দের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। মোটরবাইক, গাড়ি, সাইকেল আরোহীদের আটকে সকলকে মাস্ক ব্যবহার করতে বাধ্য করছে প্রশাসন। ওল্ড দিঘার জগন্নাথ স্নান ঘাটের কাছে থাকে এক চায়ের দোকানদার বলেন, ‘‘মাস্ক ছাড়া কেউ কেনাকাটা করতে এলে তাঁকে অবিলম্বে ফেরত পাঠাতে বলা হয়েছে। অন্যথায় পুলিশকে খবর দিতে বলা হয়েছে।’’
পুলিশের এত কড়াকড়ি এবং করোনা আক্রান্তের খোঁজ মেলার পরে সপ্তাহন্তে পর্যটকদের তেমন দেখা মিলছে না দিঘায়। শনিবার শহরের রাস্তাঘাট ছিল ফাঁকা। অদিকাংশ দোকানপাটও ছিল বন্ধ। কার্যত পর্যটক শূন্য মন্দারমণিও। হোটেল ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, গত ৮ জুন থেকে দিঘা পর্যটকদের জন্য খুলে গিয়েছে। জুলাই থেকে পরপর দু’সপ্তাহে অনেক পর্যটক ঘুরতেও এসেছিলেন। কিন্তু তাল কেটেছে চলতি সপ্তাহান্তে। দিঘা হোটেল মালিক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দু-একজন ঘুরতে আসছেন। তবে আক্রান্তের খোঁজ মেলায় এখন আতঙ্কে কর্মীরাই হোটেলে কাজ করতে চাইছেন না। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে হোটেল ব্যবসা করা কষ্টকর হবে।’’
মন্দারমণিতে ভবিষ্যতে পর্যটন কেন্দ্র সংলগ্ন কালিন্দি বাজারে স্থানীয়দের কেনাকাটা ও পর্যটকদের অবাধ ঘোরাঘুরিতে নিয়ন্ত্রণ আনতে এ দিন কালিন্দী গ্রাম পঞ্চায়েত, মন্দারমনি উপকূল থানার পুলিশ এবং মৎস্যজীবী সংগঠনগুলিকে নিয়ে একটি জরুরি বৈঠক হয়। সেখানে মন্দারমণি এবং সংলগ্ন এলাকায় মোবাইল বাজার চালু করার ব্যাপারে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
কালিন্দি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান স্বপন দাস বলেন, ‘‘অকারণে বাজারগুলিতে যাতে পর্যটক এবং স্থানীয়দের ভিড় না হয়, তার জন্য ব্যবসায়ীদের মোবাইল বাজার চালুর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। মাস্ক না থাকলে গ্রাহকদের জিনিস না দিতে দোকানদারদের বলে দেওয়া হয়েছে।’’ এ দিনের আলোচনা প্রসঙ্গে কাঁথি মহকুমা খটি মৎস্যজীবী উন্নয়ন সমিতির সভাপতি লক্ষ্মীনারায়ণ জানা বলেন, ‘‘মন্দারমণি এলাকায় বিশাল অংশ জুড়ে মৎস্যজীবীদের বসবাস। তাই অতি মহামারী পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য মৎস্যজীবীদের সহযোগিতা চেয়েছে প্রশাসন। তাতে আমরা রাজি হয়েছি।’’